Russia alleged that Ukraine launched a drone attack on President Vladimir Putin’s Valdai residence in December 2025, a claim strongly denied by Kyiv, raising concerns over ongoing peace negotiations.
শান্তি আলোচনার মুখে নতুন সংকট
এক নজরে সারসংক্ষেপ
২০২৫ সালের ২৯ ডিসেম্বর রাশিয়া দাবি করে, ইউক্রেন ৯১টি দূরপাল্লার ড্রোন ব্যবহার করে প্রেসিডেন্ট Vladimir Putin-এর ব্যক্তিগত রাষ্ট্রীয় বাসভবনে হামলার চেষ্টা করেছে। এই বাসভবনটি রাশিয়ার নভগোরোদ অঞ্চলের ভালদাই এলাকায় অবস্থিত।
ইউক্রেন এই অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করে। প্রেসিডেন্ট Volodymyr Zelenskyy একে “পুরোপুরি বানানো গল্প” বলে উল্লেখ করেন। তাঁর মতে, শান্তি আলোচনা ভেস্তে দিতেই রাশিয়া এই মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে।
এই ঘটনা ঘটে এমন এক সময়ে, যখন ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি আলোচনায় বড় অগ্রগতি হচ্ছিল এবং মাত্র এক দিন আগেই জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট Donald Trump-এর সঙ্গে বৈঠক করেন।
ঘটনা প্রবাহ: ২৪–৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫
২৪ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে:
-
২৪ ডিসেম্বর: ইউক্রেন শান্তি আলোচনার খসড়া নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করে
-
২৮ ডিসেম্বর: জেলেনস্কি ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন
-
২৯ ডিসেম্বর (সকাল): রাশিয়া অভিযোগ তোলে যে ইউক্রেন পুতিনের বাসভবনে ড্রোন হামলা চালিয়েছে
-
২৯ ডিসেম্বর (দুপুর): ইউক্রেন আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ অস্বীকার করে
-
৩০ ডিসেম্বর: রাশিয়া “প্রতিশোধমূলক হামলার” হুমকি দেয়
এই সময়সীমা অনেক প্রশ্ন তোলে। শান্তি আলোচনার ঠিক মুহূর্তে এমন অভিযোগ কি কাকতালীয়?
রাশিয়ার দাবি কী?
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেন,
-
২৮–২৯ ডিসেম্বর রাতে ইউক্রেন ৯১টি ড্রোন পাঠায়
-
লক্ষ্য ছিল পুতিনের ভালদাই বাসভবন
-
রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সব ড্রোন ভূপাতিত করে
-
কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা হতাহতের ঘটনা ঘটেনি
নভগোরোদ অঞ্চলের গভর্নর দাবি করেন, অন্তত ৪১টি ড্রোন ধ্বংস করা হয়েছে।
ভালদাই বাসভবনের গুরুত্ব
এই বাসভবনটি ২০২২ সালের যুদ্ধের পর পুতিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগত আশ্রয়স্থল হয়ে ওঠে। এখানে রয়েছে—
-
শক্তিশালী আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
-
Pantsir-S1 ক্ষেপণাস্ত্র
-
উঁচু কংক্রিট প্রাচীর
-
হেলিপ্যাড ও আলাদা প্রশাসনিক ভবন
রাশিয়ার মতে, এই জায়গায় হামলার চেষ্টা মানে সরাসরি রাষ্ট্রপ্রধানকে লক্ষ্য করা।
প্রমাণ কোথায়? বড় প্রশ্নচিহ্ন
রাশিয়ার দাবি অনুযায়ী এটি ছিল যুদ্ধের ইতিহাসে অন্যতম বড় ড্রোন হামলা। কিন্তু—
-
কোনো ছবি নেই
-
কোনো ভিডিও নেই
-
ধ্বংস হওয়া ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ দেখানো হয়নি
-
সাধারণ মানুষের মোবাইল ভিডিও বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট নেই
যেখানে রাশিয়া সাধারণত ছোট ড্রোন হামলারও ভিডিও প্রকাশ করে, সেখানে ৯১টি ড্রোনের ঘটনায় সম্পূর্ণ নীরবতা সন্দেহ বাড়ায়।
ইউক্রেনের অবস্থান: “এটা রাশিয়ার পুরনো কৌশল”
জেলেনস্কি সরাসরি বলেন—
“এটি একটি সম্পূর্ণ বানানো গল্প। শান্তি আলোচনাকে ধ্বংস করতেই এই নাটক।”
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা বলেন—
-
২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে
-
এখনো কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই
-
কারণ, এমন হামলাই হয়নি
ইউক্রেনের যুক্তি
-
কৌশলগত যুক্তি নেই
ইউক্রেন সাধারণত রাশিয়ার তেল শোধনাগার, বিমানঘাঁটি ও অস্ত্র গুদাম লক্ষ্য করে। ব্যক্তিগত বাসভবন নয়। -
সময়টা সন্দেহজনক
ট্রাম্প–জেলেনস্কি বৈঠকের ঠিক পরেই অভিযোগ। -
প্রমাণের অভাব
আসল হামলা হলে তথ্য লুকানো অসম্ভব।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
আন্তর্জাতিক সামরিক বিশ্লেষকেরা বলছেন—
-
প্রযুক্তিগতভাবে এমন হামলা সম্ভব
-
কিন্তু কৌশলগতভাবে এটি ইউক্রেনের জন্য লাভজনক নয়
একজন বিশ্লেষকের ভাষায়—
“পুতিনের বাসভবনে হামলা করলে ইউক্রেন কিছুই পেত না, বরং রাশিয়া বড় প্রচার সুযোগ পেত।”
ট্রাম্পের ভূমিকা: মাঝখানে আটকে পড়া মধ্যস্থতাকারী
মার-আ-লাগো বৈঠক
২৮ ডিসেম্বর ট্রাম্প ও জেলেনস্কির বৈঠকে—
-
২০ দফা শান্তি কাঠামোর ৯০% নিয়ে একমত
-
নিরাপত্তা নিশ্চয়তা নিয়ে ১০০% ঐকমত্য
-
NATO সদস্যপদ আপাতত স্থগিত রাখার প্রস্তাব
পুতিনের কৌশল
পুতিন—
-
বৈঠকের আগে ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেন
-
অভিযোগের পর আবার কথা বলেন
ফলে ট্রাম্পের কানে প্রথম ও শেষ কথা বলেন পুতিন।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
-
“আমি রেগে গেছি”
-
আবার বলেন, “দেখা যাক কী হয়েছিল”
তিনি পুরোপুরি রাশিয়ার দাবি সমর্থনও করেননি, আবার বাতিলও করেননি।
শান্তি আলোচনার ওপর প্রভাব
এই অভিযোগ শান্তি প্রক্রিয়াকে তিনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে—
-
আলোচনা থমকে যেতে পারে
-
রাশিয়া কঠোর শর্তে ফিরতে পারে
-
নতুন সামরিক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে
রাশিয়া ইতিমধ্যে বলেছে—
“আমরা আমাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনা করব।”
২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার মূল বিষয়
-
কিছু এলাকা থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহার
-
ডনবাস অঞ্চলে ভবিষ্যৎ গণভোট
-
ইউক্রেনের জন্য দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তা গ্যারান্টি
-
NATO সদস্যপদ আপাতত স্থগিত
-
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক বাহিনী
সবচেয়ে বড় সমস্যা—
-
ডনবাস ও জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চল
-
জাপোরিঝঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র
বড় প্রেক্ষাপট: ড্রোন যুদ্ধ ও ভবিষ্যৎ
২০২৫ সালে—
-
রাশিয়া ৪৪,০০০+ শাহেদ ড্রোন ব্যবহার করেছে
-
ইউক্রেন রাশিয়ার গভীরে সফল হামলা চালিয়েছে
-
তেল শোধনাগার ধ্বংসে রাশিয়ার বড় ক্ষতি হয়েছে
এই প্রেক্ষাপটে পুতিনের বাসভবনে হামলার গল্প আরও অস্বাভাবিক লাগে।
সম্ভাব্য চারটি ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি
-
আলোচনা আবার শুরু
-
আলোচনা ঝুলে থাকা
-
সামরিক উত্তেজনা বৃদ্ধি
-
রাশিয়ার বিশ্বাসযোগ্যতা ক্ষয়
উপসংহার: প্রশ্নটা ড্রোন নয়, বিশ্বাস
আসল প্রশ্ন—
৯১টি ড্রোন ছিল কি না, তা নয়।
প্রশ্ন হলো—এই যুদ্ধ থামাতে সত্যের প্রতি সবার ইচ্ছা আছে কি না।
এই অভিযোগ সত্য হোক বা মিথ্যা, এটি দেখিয়ে দিল—
-
শান্তি কতটা ভঙ্গুর
-
কূটনীতি কতটা তথ্যযুদ্ধের ওপর নির্ভরশীল
আগামী জানুয়ারির বৈঠকগুলো ঠিক করবে—
এই যুদ্ধ শেষের পথে যাবে, না আরও গভীর অন্ধকারে ঢুকবে।