সূর্যাস্ত আইন বলতে বোঝায় এমন একটি আইন যা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজস্ব পরিশোধ না করলে জমিদারের জমিদারি বাতিল করে দেওয়ার বিধান রাখে। এই আইনটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত প্রবর্তনের সময় প্রবর্তন করে।
চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে, কোম্পানি জমিদারদের জমিদারি চিরস্থায়ীভাবে দান করে। তবে, জমিদারদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়। যদি জমিদার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজস্ব পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার জমিদারি বাতিল করে দেওয়া হয়। এই আইনটিকে সূর্যাস্ত আইন বলা হয় কারণ নির্দিষ্ট সময়ের পরে, অর্থাৎ সূর্যাস্তের পরে, জমিদারের জমিদারি বাতিল হয়ে যায়।
সূর্যাস্ত আইন ছিল ব্রিটিশদের এক ভয়াবহ অত্যাচার। এই আইনের ফলে অনেক জমিদার তাদের জমিদারি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে। জমিদারদের পক্ষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজস্ব পরিশোধ করা ছিল খুবই কঠিন। কারণ, ব্রিটিশরা জমিদারদের থেকে খুব বেশি রাজস্ব আদায় করত। ফলে, অনেক জমিদার রাজস্ব পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় এবং তাদের জমিদারি বাতিল হয়ে যায়।
সূর্যাস্ত আইনের ফলে ভারতে কৃষি ব্যবস্থার উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে। জমিদারদের জমিদারি বাতিল হওয়ায় অনেক কৃষক বেকার হয়ে পড়ে। ফলে, গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিপর্যয় নেমে আসে।
সূর্যাস্ত আইন ব্রিটিশদের ভারত শাসনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ছিল। এই আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশরা ভারতীয় জমিদারদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছিল।
সূর্যাস্ত আইনের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক নিম্নরূপ:
- এই আইনটি ভারতে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের অধীনে প্রবর্তিত হয়েছিল।
- এই আইনের অধীনে, জমিদারদেরকে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজস্ব পরিশোধ করতে হয়।
- যদি জমিদার নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রাজস্ব পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তার জমিদারি বাতিল হয়ে যায়।
- এই আইনটি ব্রিটিশদের ভারত শাসনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার ছিল।
সূর্যাস্ত আইন ছিল ব্রিটিশদের ভারত শাসনকে আরও শক্তিশালী করার জন্য একটি ভয়াবহ অত্যাচার। এই আইনের ফলে ভারতে কৃষি ব্যবস্থার উপর মারাত্মক প্রভাব পড়ে এবং অনেক মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়ে।