মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট যদি ট্রাম্পের Global Tariff বাতিল করে, ভারত হাত না নড়িয়েই ‘জিতে’ যাবে — বিশ্লেষণ

Cartoon illustration of US Supreme Court reviewing Trump global tariff and its impact on India trade benefits


যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এখন সবচেয়ে বড় আইনি প্রশ্নগুলোর একটি হলো Trump Global Reciprocal Tariff কি মোটেই সাংবিধানিক? আর এই প্রশ্নের উত্তর যদি US Supreme Court থেকে “না” আসে, তবে ভারত কোনো উদ্যোগ না নিয়েই বিশাল কৌশলগত সুবিধা পেয়ে যাবে। কারণ ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপ করা IEEPA-ভিত্তিক global tariffs অবৈধ হলে সরাসরি বাতিল হবে, আমদানিকারকরা Import Duty Refund পাবে, এবং ওয়াশিংটনের উপর ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টির ক্ষমতাই ভেঙে পড়বে। ফলে India-US Trade War–এ ভারত স্বয়ংক্রিয়ভাবে একটি শক্তিশালী অবস্থানে চলে আসবে।


কেন ট্রাম্পের Reciprocal Tariff আইনি ঝুঁকিতে?

১. মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী Tariff = Tax

মার্কিন সংবিধান অনুযায়ী taxing power পুরোপুরি কংগ্রেসের হাতে। আর ট্যারিফ মূলত “foreign-facing tax”—অর্থাৎ বিদেশি পণ্যের উপর আরোপ করা আমদানি কর।
সুতরাং প্রশ্ন উঠেছে—

একজন প্রেসিডেন্ট কি নির্বাহী আদেশে পুরো বিশ্বে শুল্ক আরোপ করতে পারেন?

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা স্পষ্টভাবে বলেছেন:
“ট্যারিফকে যদি ট্যাক্স ধরা হয়, তবে এটি কংগ্রেসের ক্ষমতা। নির্বাহী শাখাকে সীমাহীন শুল্ক আরোপের ক্ষমতা দেওয়া সাংবিধানিকভাবে বিপজ্জনক।”

২. IEEPA আইন (1977) Tariff আরোপের ক্ষমতা দেয় না

ট্রাম্প তাঁর “global reciprocal tariff” আরোপ করেছিলেন IEEPA (International Emergency Economic Powers Act) ব্যবহার করে।

কিন্তু IEEPA ঐতিহাসিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে—

  • সম্পদ জব্দ
  • লেনদেন নিয়ন্ত্রণ
  • জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলা
  • নিষেধাজ্ঞা আরোপ

কিন্তু সামগ্রিক global tariff schedule তৈরি করার জন্য নয়।

একাধিক lower court ইতিমধ্যে রায় দিয়েছে—

IEEPA Trade Deficit বা Migration Crisis মোকাবিলার আইন নয়; এটি Tariff Statute নয়।

৩. Major Questions Doctrine

সুপ্রিম কোর্টের রক্ষণশীল বিচারপতিরা repeatedly বলেছেন—

“এত বড় অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত — শত শত বিলিয়ন ডলারের ট্যারিফ— শুধুমাত্র একটি অস্পষ্ট জরুরি আইনের ব্যাখ্যা থেকে তৈরি করা যায় না।”

এটাই Major Questions Doctrine:
বৃহৎ অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তে কংগ্রেসের স্পষ্ট অনুমতি লাগবে।

৪. Nondelegation Doctrine

বিচারপতিরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে—

“IEEPA যদি global tariff ক্ষমতা দেয়, তাহলে প্রেসিডেন্ট হয়ে যাবেন এক ব্যক্তি ‘World Trade Controller’। এটা অসাংবিধানিক ক্ষমতা হস্তান্তর।”


কেন সুপ্রিম কোর্টের রায় ভারতকে ‘লাভবান’ করবে?

সুপ্রিম কোর্ট যদি IEEPA-based global tariffs সম্পূর্ণ অকার্যকর ঘোষণা করে, তবে ভারতের সামনে কয়েকটি বড় সুফল খুলে যাবে।


১. স্বয়ংক্রিয়ভাবে Tariff বাতিল + আমদানিকারকদের Refund

আইনি ভিত্তি ভেঙে পড়লে—

  • ট্রাম্পের সব global reciprocal tariffs বাতিল হবে
  • পণ্য আমদানিকারকরা বিলিয়ন-ডলারের refund পাবে
  • ভারতীয় রপ্তানিকারীদের উপর ‘অতিরিক্ত শুল্কের চাপ’ অটোমেটিক কমে যাবে

যেহেতু ভারতের রপ্তানি সরাসরি সস্তা হয়ে যাবে, তাই India-US trade balance ভারতের পক্ষে ঝুঁকে যাবে।


২. মার্কিন চাপ কমে গেলে ভারতের Negotiation Power বাড়বে

IEEPA-ভিত্তিক Global Tariff ছিল ট্রাম্পের প্রধান কূটনৈতিক অস্ত্র।

এটি বাতিল হলে—

  • মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে চাপ দিতে পারবে না
  • Trade Negotiation Table-এ ভারত পাবে শক্তিশালী অবস্থান
  • MFN শুল্কহার অনুযায়ী আবার স্বাভাবিক বাণিজ্য ব্যবস্থা ফিরবে
  • ভারত চুক্তির ক্ষেত্রে কম ছাড় দিয়ে বেশি সুবিধা নিতে পারবে

অর্থাৎ ভারতকে কোনো Counter-Tariff বা Retaliation করতে হবে না — তবুও সুবিধা পাবে।


৩. মার্কিন প্রশাসন ‘নতুন আইনি ভিত্তি’ খুঁজতে ব্যস্ত হবে

IEEPA খারিজ হলে প্রশাসন ফিরে যাবে—

  • Section 232 (National Security Tariff)
  • Section 301 (China-focused unfair trade action)
  • Section 201 (Safeguard Tariff)
  • Section 122 (Time-limited emergency tariff)

এগুলো সবই—

  • সংকীর্ণ পরিসরে কার্যকর
  • প্রচুর প্রক্রিয়া লাগে
  • বেশিরভাগই চ্যালেঞ্জযোগ্য
  • global tariff আরোপ করতে পারে না

ফলে ভারতের রপ্তানি বাজারে হঠাৎ, sweeping shocks আসবে না।


IEEPA Tariff কেন দুর্বল: মূল আইনি ‘লোফোল’

১. IEEPA একটি “Sanctions Law”, Tariff Law নয়

বিচারপতিরা মন্তব্য করেছেন—

“IEEPA কখনোই ট্যারিফ তৈরি বা শুল্ক আরোপের জন্য ব্যবহৃত হয়নি।”

অর্থাৎ এটি ভুল আইনি ভিত্তি।


২. Tariff = Tax Argument

যদি ট্যারিফকে ট্যাক্স হিসেবে গণ্য করা হয়—

  • কংগ্রেসের একচেটিয়া ক্ষমতা
  • প্রেসিডেন্ট unilateralভাবে করতে পারেন না

এটি সবচেয়ে শক্তিশালী সাংবিধানিক আঘাত।


৩. Nondelegation Risk

যদি IEEPA global tariff করতে পারে, তবে—

  • ভবিষ্যতের প্রেসিডেন্টও একইভাবে সীমাহীন ক্ষমতা দাবি করতে পারবেন
  • এটি Separation of Powers লঙ্ঘন

বিচারপতিরা এটিকে “one-way ratchet of power” বলেছেন।


তবুও ভারতের ‘জয়’ পুরোপুরি নিশ্চিত নয় কেন?

১. মার্কিন প্রশাসনের হাতে বিকল্প অস্ত্র আছে

IEEPA বাতিল হলেও—

  • Section 232 national security tariffs
  • Section 301 China-related tariffs
  • Section 201 safeguard tariffs
  • Section 122 temporary tariffs

এসব আইনি হাতিয়ার এখনও বৈধ।
তবে এগুলো খুব নির্দিষ্ট সেক্টরকে লক্ষ্য করে, ভারতের উপর sweeping global duty চাপাতে পারে না।


২. Supreme Court আংশিক রায়ও দিতে পারে

কোর্ট যদি—

  • পুরো IEEPA tariff strike down না করে
  • বরং এর প্রয়োগ কিছুটা সীমিত করে

তাহলে ভারতের লাভ হবে, তবে সর্বোচ্চ মাত্রায় নয়।


৩. চূড়ান্ত রায় ২০২৬ সালের আগে আসছে না

এই সময়ের মধ্যে—

  • নীতি অনিশ্চয়তা থাকবে
  • শুল্ককাঠামো বারবার বদলাতে পারে

ভারতের জন্য Bottom Line

যদি US Supreme Court IEEPA-ভিত্তিক Trump Reciprocal Global Tariff বাতিল করে, তবে ভারতের পক্ষে বিশাল কৌশলগত পরিবর্তন হবে—

১. শুল্ক বাতিল → রপ্তানি সস্তা → প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি

২. আমদানিকারকদের Refund → ভারতীয় পণ্য পুনরায় জনপ্রিয়

৩. মার্কিন চাপ ভেঙে পড়বে → Negotiation Power ভারতের হাতে

৪. Trade War-এ ভারত বিনা প্রয়াসে সুবিধা পাবে

যদিও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র Section 232/301 ধরনের নতুন টুল ব্যবহার করতে পারে, সেগুলো—

  • অনেক সীমিত
  • বহু প্রক্রিয়া লাগে
  • আদালতে চ্যালেঞ্জযোগ্য
  • ভারতকে পূর্ণমাত্রায় ক্ষতি করতে পারে না

এককথায়—

সুপ্রিম কোর্ট ট্রাম্পের Tariff Architecture ভেঙে দিলে India-US Trade Strategy পুরোপুরি বদলে যাবে—ভারতকে কিছুই করতে হবে না, তবুও লাভ মিলবে।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনও বিষয়ে ডাউট থাকে বা কোনও বিষয় suggest করতে চান তাহলে মেল করুন!

নবীনতর পূর্বতন

banglafacts 4