![]() | |
| Trump administration’s H-1B visa fee hike and 50% tariffs on India trigger legal challenges and strain US–India relations. |
যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্ক কি এক গভীর অর্থনৈতিক সংঘর্ষের মুখে?
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক দুটি নীতিগত সিদ্ধান্ত—নতুন H-1B ভিসার উপর ১ লক্ষ ডলারের ফি এবং ভারতের পণ্যের উপর কার্যত ৫০% শুল্ক—শুধু অভিবাসন বা বাণিজ্য নীতির বিষয় নয়। এই সিদ্ধান্তগুলো যুক্তরাষ্ট্র–ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভিত নাড়িয়ে দিয়েছে এবং দুই দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও মানবসম্পদের ওপর গভীর প্রভাব ফেলছে।
উত্তর: মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলো দাবি করছে যে ট্রাম্প প্রশাসনের ১ লক্ষ ডলারের H-1B ভিসা ফি বেআইনি, স্বেচ্ছাচারী এবং সংবিধানবিরোধী, কারণ এটি কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই আরোপ করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভারতের উপর ৫০% ট্যারিফ মার্কিন ব্যবসা, সরবরাহ শৃঙ্খল ও ভোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই দুই সিদ্ধান্তই যুক্তরাষ্ট্র–ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্বকে দুর্বল করছে এবং আইনি ও রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
একদিকে প্রায় ২০টি মার্কিন অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছে, দাবি করছে যে H-1B ফি বেআইনি ও সংবিধানবিরোধী। অন্যদিকে, ভারতের উপর আরোপিত বিশাল ট্যারিফ মার্কিন ব্যবসা, সরবরাহ শৃঙ্খল এবং ভোক্তাদেরও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এই দ্বিমুখী চাপের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিচ্ছে এবং ভারতে আইটি পেশাজীবী, ছাত্রসমাজ ও নীতিনির্ধারকদের মধ্যে গভীর উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—এই “স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ” কি সত্যিই টিকে থাকবে, নাকি একটি পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক সংঘর্ষের দিকে এগোচ্ছে?
কেন মার্কিন অঙ্গরাজ্যগুলো ট্রাম্পের বিরুদ্ধে H-1B ফি নিয়ে মামলা করছে
২০২৫ সালের ১২ ডিসেম্বর, ক্যালিফোর্নিয়া ও নিউইয়র্কের নেতৃত্বে প্রায় ২০টি (মূলত ডেমোক্র্যাট-শাসিত) মার্কিন অঙ্গরাজ্য ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটি বড় আইনি চ্যালেঞ্জ দায়ের করে। এই মামলার মূল লক্ষ্য হলো নতুন H-1B ভিসা আবেদনের উপর আরোপিত ১ লক্ষ ডলারের ফি সম্পূর্ণভাবে বাতিল করা।
মামলার আইনি ভিত্তি
রাজ্যগুলোর অভিযোগ তিনটি মূল স্তম্ভের উপর দাঁড়িয়ে—
-
প্রশাসনিক পদ্ধতি আইন (APA) লঙ্ঘন
ট্রাম্প প্রশাসন যথাযথ “নোটিস অ্যান্ড কমেন্ট” প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই এই বিশাল ফি চাপিয়েছে, যা আইনত বাধ্যতামূলক। -
ফি নির্ধারণে স্বেচ্ছাচারিতা
প্রচলিত H-1B ফি যেখানে ১,০০০–৫,০০০ ডলারের মধ্যে, সেখানে হঠাৎ ১ লক্ষ ডলার ধার্য করার কোনও যুক্তিসঙ্গত অর্থনৈতিক বা প্রশাসনিক ব্যাখ্যা নেই। -
কংগ্রেসের কর আরোপের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ
রাজ্যগুলোর মতে, এ ধরনের ফি কার্যত একটি কর (tax), যা নির্ধারণ করার সাংবিধানিক ক্ষমতা শুধুমাত্র কংগ্রেসের।
ক্যালিফোর্নিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল রব বন্টা স্পষ্ট ভাষায় বলেন,
“কোনও প্রেসিডেন্টের একক সিদ্ধান্তে আমাদের হাসপাতাল, বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হতে পারে না। এটি সংবিধানবিরোধী।”
কেন এই ফি শুধু ‘বিগ টেক’-এর সমস্যা নয়
ট্রাম্প প্রশাসন দাবি করছে, এই ফি মূলত প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর “অতিরিক্ত” H-1B ব্যবহার ঠেকানোর জন্য। কিন্তু মামলায় বলা হয়েছে—
-
বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান
-
সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য পরিষেবা
-
পাবলিক সেক্টরের ইঞ্জিনিয়ারিং ও সায়েন্স ল্যাব
এই সমস্ত ক্ষেত্রেই H-1B কর্মীদের উপর ব্যাপক নির্ভরতা রয়েছে। ১ লক্ষ ডলারের ফি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে বহন করা কার্যত অসম্ভব, যার সরাসরি প্রভাব পড়বে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থায়।
| Policy Area | US Businesses | Indian IT | Students |
|---|---|---|---|
| H-1B Fee | 7 | 9 | 8 |
| 50% Tariff | 8 | 7 | 4 |
ভারতের উপর ৫০% ট্যারিফ: মার্কিন ব্যবসার উপরেই কি আঘাত?
ট্রাম্প প্রশাসনের “রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ” নীতির ফলে ভারতের রপ্তানির বড় অংশ কার্যত ৫০% শুল্কের মুখে পড়েছে। আনুমানিক ৪৮–৫৮ বিলিয়ন ডলারের ভারতীয় পণ্য এই শুল্ক কাঠামোর আওতায়।
ট্যারিফের গঠন
-
প্রথম ২৫%: বাণিজ্য ঘাটতির অজুহাতে (জুলাই ২০২৫)
-
দ্বিতীয় ২৫%: রাশিয়া থেকে তেল কেনার “শাস্তি” হিসেবে (আগস্ট ২০২৫)
ফলাফল—ভারত এখন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বেশি শুল্ক-আরোপিত বাণিজ্য অংশীদারদের অন্যতম।
কোন সেক্টর সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত?
-
টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস
-
সামুদ্রিক খাবার (seafood)
-
চামড়া ও হ্যান্ডিক্রাফট
-
MSME-নির্ভর ম্যানুফ্যাকচারিং
-
অটো পার্টস ও মেশিন টুলস
যদিও ফার্মাসিউটিক্যালস ও সেমিকন্ডাক্টর তুলনামূলকভাবে ছাড় পেয়েছে, শ্রমনির্ভর শিল্পগুলো মারাত্মক চাপের মুখে।
মার্কিন কোম্পানির সমস্যা কোথায়?
এই শুল্কের বোঝা শেষ পর্যন্ত—
-
মার্কিন আমদানিকারক
-
মার্কিন নির্মাতা
-
মার্কিন ভোক্তা
সবার উপরেই পড়ছে। অনেক মার্কিন কোম্পানি এখন হয় দাম বাড়াতে বাধ্য, নয়তো লাভের মার্জিন কমাতে হচ্ছে। কংগ্রেসে এই বিষয়টি নিয়ে ক্রমেই বলা হচ্ছে—“ট্যারিফ আসলে নিজের পায়ে কুড়ুল মারা।”
| Sector | Expected Decline (%) |
|---|---|
| Textiles | 65 |
| Seafood | 70 |
| MSME Manufacturing | 60 |
| Auto Parts | 45 |
| Chemicals | 40 |
মার্কিন কংগ্রেস ও ভারতীয় রাজনীতিতে প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক চাপ
হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির শুনানিতে উভয় দলের সাংসদরাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
-
অ্যামি বেরা ও রাজা কৃষ্ণমূর্তি স্পষ্টভাবে বলেছেন—
H-1B ফি ও ট্যারিফ মার্কিন কোম্পানির প্রতিযোগিতা শক্তি নষ্ট করছে। -
একটি হাউস রেজোলিউশন ইতিমধ্যেই ট্রাম্পের “জাতীয় জরুরি অবস্থা” ঘোষণা বাতিল করার জন্য আনা হয়েছে, যার ভিত্তিতেই এই ট্যারিফ চাপানো হয়েছিল।
ভারতের অবস্থান
ভারতের সংসদ ও সরকার এই বিষয়ে আপসহীন মনোভাব দেখিয়েছে।
-
প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট করেছেন—
কৃষি, জ্বালানি ও সার্বভৌম নীতিতে কোনও আপস হবে না। -
বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল বলেছেন—
“যদি আমেরিকার প্রস্তাবই সেরা হয়, তাহলে চুক্তি সই করা হচ্ছে না কেন?”
ভারতীয় আইটি পেশাজীবী, ছাত্র ও H-1B কর্মীদের উপর প্রভাব
১ লক্ষ ডলারের ফি: এক “এক্সিস্টেনশিয়াল শক”
ভারতীয় নাগরিকরা মোট H-1B ভিসার প্রায় ৭১% দখল করে। নতুন ফি কার্যত—
-
মাঝারি স্তরের আইটি কর্মীদের জন্য ভিসা অযোগ্য করে তুলছে
-
স্টার্টআপ ও ছোট কোম্পানির পক্ষে H-1B নেওয়া অসম্ভব করছে
ছাত্র ও OPT → H-1B পথ ভেঙে পড়ছে
-
F-1 ভিসা অনুমোদন ইতিমধ্যেই কমেছে
-
OPT থেকে H-1B রূপান্তর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে
-
বহু ছাত্র এখন কানাডা, ইউরোপ বা ভারতে ফেরার কথা ভাবছে
ভারতীয় আইটি সংস্থার কৌশলগত পরিবর্তন
ট্রাম্পের উদ্দেশ্য ছিল “আমেরিকান চাকরি বাঁচানো”। বাস্তবে যা হচ্ছে—
-
কাজ যাচ্ছে না আমেরিকানদের কাছে
-
বরং গ্লোবাল ক্যাপাবিলিটি সেন্টার (GCC)-এর মাধ্যমে কাজ ভারতে চলে আসছে
এটি এক ঐতিহাসিক উল্টো স্রোত।
| Year | Onsite US Hiring | Offshore/GCC Hiring |
|---|---|---|
| 2023 | High | Medium |
| 2025 | Medium | High |
| 2027 (Projected) | Low | Very High |
যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্কের ভবিষ্যৎ: তিনটি সম্ভাব্য পথ
১️ আইনি জয় ও নীতি পুনর্বিন্যাস (আশাবাদী)
আদালত যদি ফি ও ট্যারিফ বাতিল করে, তাহলে সম্পর্ক নতুন করে গড়া সম্ভব।
২️ দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থা (সবচেয়ে সম্ভাব্য)
ভিসা ও ট্যারিফ থাকবে, ভারত বিকল্প জোটে ঝুঁকবে, সম্পর্ক থাকবে কিন্তু ঠান্ডা।
৩️ ভবিষ্যৎ প্রশাসনে রিসেট
পরবর্তী মার্কিন প্রশাসন নীতি বদলালে সম্পর্ক মেরামত হতে পারে, কিন্তু বিশ্বাস ক্ষতিগ্রস্ত থাকবে।
উপসংহার: একটি ভুল হিসাবের মূল্য
ট্রাম্প প্রশাসনের H-1B ফি ও ভারতীয় ট্যারিফ একটি মৌলিক ভুল ধারণার উপর দাঁড়িয়ে—
যে অর্থনৈতিক শাস্তি দিয়ে ১৪০ কোটির একটি পরমাণু শক্তিধর দেশকে নত করা যাবে।
বাস্তবে এই নীতিগুলো—
-
যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবনী শক্তি দুর্বল করছে
-
ভারতকে বিকল্প পথে ঠেলে দিচ্ছে
-
এবং Indo-Pacific কৌশলকেই দুর্বল করছে
আগামী ১২ মাস ঠিক করে দেবে—এই সংকট একটি টার্নিং পয়েন্ট হবে, নাকি যুক্তরাষ্ট্র–ভারত সম্পর্কের এক নতুন কিন্তু শীতল অধ্যায়ের সূচনা।
People Also Ask
Why are US states suing Trump over the H-1B visa fee?
US states argue that the $100,000 H-1B visa fee violates the Administrative Procedure Act, exceeds executive authority, and unlawfully bypasses Congress’s power to set fees and taxes.
How does Trump’s H-1B fee impact Indian professionals?
The fee makes new H-1B sponsorship economically unviable for many employers, reducing hiring of Indian IT professionals and disrupting the F-1 to H-1B career pipeline.
Why did the US impose 50% tariffs on Indian goods?
The Trump administration imposed tariffs citing trade imbalance and India’s continued purchase of Russian oil, using emergency economic powers.
How are US companies affected by tariffs on India?
US firms face higher import costs, supply-chain disruptions, reduced competitiveness, and higher consumer prices due to the tariffs.
Can US-India strategic relations survive these policies?
Experts warn the policies risk long-term damage unless courts or Congress force a policy reset, as economic and people-to-people ties are eroding.
