Pentagon China Report 2025: Arunachal Core Interest & India Risk

 

পেন্টাগনের ২০২৫ সালের চীন রিপোর্ট: ভারতের জন্য বিপজ্জনক সতর্কবার্তা ও কৌশলগত অর্থ

ডিসেম্বর ২০২৪-এ প্রকাশিত US Department of Defense-এর ২০২৫ সালের বার্ষিক রিপোর্ট—Military and Security Developments Involving the People’s Republic of China—এশিয়ার নিরাপত্তা চিত্র নিয়ে এক কঠোর ও উদ্বেগজনক মূল্যায়ন হাজির করেছে। এই রিপোর্টের সবচেয়ে গুরুতর দিক ভারতের জন্য হলো—চীন আনুষ্ঠানিকভাবে অরুণাচল প্রদেশ-কে নিজের “core interest” বা মূল স্বার্থ হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এই তালিকায় আগে থেকেই ছিল তাইওয়ানদক্ষিণ চীন সাগর। অরুণাচলকে সেই একই কাতারে তোলা মানে—বেইজিং এটিকে আর আলোচনাযোগ্য সীমান্ত বিরোধ হিসেবে দেখছে না।

Pentagon China Report 2025 – Key Insight
China has officially declared Arunachal Pradesh as a “core interest,” placing it alongside Taiwan. The Pentagon warns that LAC calm is tactical, not strategic.

 

Political cartoon showing Pentagon warning as China declares Arunachal Pradesh a core interest, highlighting India’s security risk in 2025

এই পরিবর্তন ভারতের নিরাপত্তা ভাবনায় বড় ধাক্কা। কারণ “core interest” শব্দটি চীনের কূটনীতি ও সামরিক নীতিতে লাল দাগ—এখানে আপসের জায়গা নেই। ফলে দিল্লির সামনে বার্তা পরিষ্কার: সীমান্তে সাময়িক শান্তি থাকলেও, দীর্ঘমেয়াদি কৌশলগত চাপ কমছে না।


অরুণাচল প্রদেশ: “Core Interest” মানে কী?

চীনের ভাষায় “core interest” মানে এমন বিষয়, যা তাদের জাতীয় সার্বভৌমত্ব, শাসনব্যবস্থা ও ২০৪৯ সালের “জাতীয় পুনরুত্থান” লক্ষ্যের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। ইতিহাসে এই শব্দ ব্যবহার হয়েছে খুব কম বিষয়ে—তাইওয়ান, তিব্বত, শিনজিয়াং, দক্ষিণ চীন সাগর।

পেন্টাগন রিপোর্ট জানাচ্ছে, অরুণাচল প্রদেশকে এই তালিকায় যুক্ত করা হয়েছে। এর অর্থ তিনটি—

  1. অ-আলোচনাযোগ্য অবস্থান: ভবিষ্যতে সীমান্ত সমাধানের সুযোগ আরও সংকুচিত।

  2. দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ: অরুণাচল এখন চীনের ২০৪৯ ভিশনের সঙ্গে যুক্ত।

  3. সামরিক প্রস্তুতির যুক্তি: এই দাবি দেখিয়ে PLA ভবিষ্যতে আরও কড়া পদক্ষেপ নিলে সেটিকে “জাতীয় স্বার্থ” বলে ব্যাখ্যা করা হবে।

এই অবস্থান তাইওয়ানের সঙ্গে তুলনীয়—যেখানে চীন প্রয়োজনে শক্তি ব্যবহারের কথাও খোলাখুলি বলছে।


LAC-এ শান্তি: কৌশলগত বিরতি, নীতিগত পরিবর্তন নয়

২০২৪ সালের অক্টোবরে ভারত-চীন Line of Actual Control (LAC)-এ ডি-এস্কেলেশন চুক্তি করে। ডেপসাং ও ডেমচোকের মতো এলাকায় সেনা কিছুটা পেছায়। বাইরে থেকে এটি স্বস্তির খবর।

কিন্তু পেন্টাগনের বিশ্লেষণ স্পষ্ট—এটি tactical move, strategic shift নয়। চীনের মূল লক্ষ্য ছিল—

  • ভারতের সঙ্গে উত্তেজনা কমিয়ে রাখা

  • ভারত-মার্কিন ঘনিষ্ঠতা ঠেকানো

  • অন্য ফ্রন্টে (বিশেষ করে তাইওয়ান) মনোযোগ বাড়ানো

রিপোর্ট বলছে, PLA-র Western Theatre Command একটুও শিথিল হয়নি। ২০২৪ জুড়ে তারা উচ্চ-উচ্চতা ও কম অক্সিজেন পরিবেশে কঠোর মহড়া চালিয়েছে। অর্থাৎ পাহাড়ি যুদ্ধে প্রস্তুতি চলছেই।

Galwan Clash Analysis


চীনের সামরিক আধুনিকীকরণ: “Historic” বিস্তার

পেন্টাগন চীনের সামরিক বৃদ্ধি বর্ণনা করেছে “historic” শব্দে। এটি শুধু সংখ্যা বাড়ানো নয়—নিউক্লিয়ার, নৌ, বিমান, মহাকাশ, সাইবার—সব ক্ষেত্রেই দ্রুত উন্নতি।

১) নিউক্লিয়ার অস্ত্র

২০২৪ সাল পর্যন্ত চীনের প্রায় ৬০০টি পারমাণবিক ওয়ারহেড রয়েছে। পেন্টাগনের পূর্বাভাস—২০৩০-এর মধ্যে ১,০০০-এর বেশি হবে।

আরও গুরুত্বপূর্ণ হলো নীতি বদল। চীন এখন launch-on-warning বা early-warning counterstrike ধারণার দিকে যাচ্ছে। অর্থাৎ শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত করার আগেই পাল্টা হামলা।

এই ক্ষমতার জন্য চীন ১০০-র বেশি ICBM silo বানিয়েছে, যেখানে DF-31 শ্রেণির মিসাইল রাখা হচ্ছে।


২) নৌ শক্তি ও বিমানবাহী রণতরী

People's Liberation Army Navy বা PLAN এখন জাহাজ সংখ্যায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় নৌবাহিনী—৩৭০-র বেশি যুদ্ধজাহাজ। ২০৩০-এ এটি ৪৩৫ ছুঁতে পারে।

সবচেয়ে বড় পরিবর্তন বিমানবাহী রণতরীতে—

  • Liaoning: পুরনো সোভিয়েত জাহাজ

  • Shandong: প্রথম দেশীয় ক্যারিয়ার

  • Fujian: ২০২৫-এ কমিশন, আধুনিক CATOBAR সিস্টেম সহ

Fujian-এর ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্যাটাপাল্ট প্রযুক্তি চীনকে মার্কিন মানের কাছাকাছি নিয়ে গেছে। পেন্টাগনের মতে, ২০৩৫-এর মধ্যে চীনের ৯টি ক্যারিয়ার থাকতে পারে।

এর অর্থ—Indian Ocean-এ চীনের উপস্থিতি বাড়বে।


তাইওয়ান: ২০২৭ ডেডলাইন

পেন্টাগন রিপোর্টে বলা হয়েছে, চীনের জন্য ২০২৭ একটি বাধ্যতামূলক সময়সীমা। এই সময়ের মধ্যে PLA-কে—

  • তাইওয়ানের ওপর decisive victory সক্ষমতা

  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে counterbalance

  • আঞ্চলিক দেশগুলোর ওপর deterrence

২০২৪-তে চীন তাইওয়ান ঘিরে স্ট্রাইক, নৌ অবরোধ ও US ফোর্সে আঘাতের অনুশীলন চালিয়েছে। এটি কেবল মহড়া নয়—বাস্তব অপশনের পরীক্ষা।


পাকিস্তান ফ্যাক্টর: ভারতের ওপর পরোক্ষ চাপ

চীন LAC-এ শান্তির কথা বললেও, পাকিস্তান পথে চাপ বাড়াচ্ছে। এটি এক ধরনের dual strategy

অস্ত্র সরবরাহ

চীন পাকিস্তানকে দিয়েছে—

  • J-10C fighter jet (৩৬টি প্রতিশ্রুত, ২০টি ডেলিভারি)

  • PL-15 long-range missile

  • JF-17 যৌথ উৎপাদন

  • Wing Loong UAV, Caihong drone

  • নৌ ফ্রিগেট

২০২৫-এর মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষে এই চীনা অস্ত্র ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে।

অপারেশনাল ইন্টিগ্রেশন

চীন-পাকিস্তান যৌথ মহড়া, প্রশিক্ষণ ও কমান্ড সমন্বয় বাড়াচ্ছে। লক্ষ্য—পাকিস্তানকে এমন এক interoperable ally বানানো, যা ভারতের এয়ার ডিফেন্স ও মিসাইল পরিকল্পনাকে জটিল করে তুলবে।


বিদেশে চীনের ঘাঁটি: পাকিস্তান কি পরবর্তী?

চীনের এখন একটিই নিশ্চিত বিদেশি সামরিক ঘাঁটি—Djibouti (২০১৭ থেকে)। এটি বাব-এল-মান্দেব জলপথ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ।

পেন্টাগন বলছে, পাকিস্তান সহ প্রায় ২০টি দেশে চীন ভবিষ্যতে স্থায়ী ঘাঁটির কথা ভাবতে পারে। যদি পাকিস্তানে চীনা নৌ বা বিমান ঘাঁটি হয়, তবে ভারতের কৌশলগত পরিবেশ আমূল বদলে যাবে।


সার্বিক মূল্যায়ন: শান্তি ও চাপের প্যারাডক্স

পেন্টাগনের মূল কথা পরিষ্কার—

  • LAC-এ শান্তি temporary

  • দীর্ঘমেয়াদি প্রতিযোগিতা চলমান

  • ভারত এখনো চীনের কাছে secondary challenge

  • পাকিস্তান ব্যবহৃত হচ্ছে pressure valve হিসেবে

অর্থাৎ, চীন একদিকে হাত বাড়াচ্ছে, অন্যদিকে শক্তি জমাচ্ছে।


ভারতের জন্য কৌশলগত বার্তা

এই রিপোর্ট থেকে ভারতের জন্য চারটি বড় শিক্ষা—

  1. অরুণাচল এখন core interest: আলোচনার জায়গা কম

  2. দীর্ঘমেয়াদি চাপের প্রস্তুতি: ২০২৫-২০৪৯ টাইমলাইন

  3. Two-front risk: চীন + পাকিস্তান

  4. Strategic alignment জরুরি: বিশেষ করে US-এর সঙ্গে

পেন্টাগনের মূল্যায়ন বলছে—চীনের কৌশলগত stop নেই। তাই ভারতের জন্য বিকল্পও স্পষ্ট—সাময়িক শান্তিতে ভরসা নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি শক্তি, জোট ও প্রস্তুতির ওপর জোর।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনও বিষয়ে ডাউট থাকে বা কোনও বিষয় suggest করতে চান তাহলে মেল করুন!

নবীনতর পূর্বতন

banglafacts 4