চীনের "ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র" ব্যবহার নিয়ে মার্কিন সিনেটর বিল হ্যাজার্টির বিতর্কিত বক্তব্য: সত্য ও মিথ্যার প্রেক্ষাপট
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে মার্কিন সিনেটর বিল হ্যাজার্টির এক বিস্ময়কর দাবি। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, ২০২০ সালের গালওয়ান উপত্যকা সংঘর্ষের সময় চীন ভারতীয় সেনাদের বিরুদ্ধে "ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র" ব্যবহার করে তাদের শারীরিকভাবে "লিটারালি মেল্ট" করে ফেলে। এই বিতর্কিত মন্তব্যটি আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং মিডিয়ার নজর কেড়েছে। চলুন এই দাবির প্রেক্ষাপট, প্রামাণিকতা, এবং সম্ভাব্য কূটনৈতিক উদ্দেশ্য নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করি।
গালওয়ান সংঘর্ষে চীন ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে – এই দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও মিথ্যা।
২০২০ সালের ১৫-১৬ জুন গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চীন সেনার মধ্যে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র বা উন্নত অস্ত্র ব্যবহার হয়নি। সংঘর্ষ হয়েছে শুধু হাতাহাতি, লাঠি ও পাথর দিয়ে।
| বিষয় | মার্কিন সিনেটরের দাবি | বাস্তবতা |
|---|---|---|
| অস্ত্রের ধরন | ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র | কোনো উন্নত অস্ত্র নয় – শুধু লাঠি-পাথর |
| মৃত্যুর কারণ | শরীর গলিয়ে দেওয়া | আঘাত, পতন ও হাইপোথার্মিয়া |
| প্রমাণ | আছে বলে দাবি | কোনো প্রমাণ নেই |
| ভারত ও চীনের বক্তব্য | — | দুই দেশই দাবিটি অস্বীকার করেছে |
উপসংহার: মার্কিন সিনেটর বিল হ্যাজার্টির “ভারতীয় সেনাদের শরীর গলিয়ে দেওয়া হয়েছে” দাবিটি কোনো প্রমাণ ছাড়াই করা রাজনৈতিক প্রচারণা মাত্র।
গালওয়ান উপত্যকা সংঘর্ষ: একটি সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা
২০২০ সালের জুন মাসে ভারতের লাদাখ অঞ্চলে গালওয়ান উপত্যকায় ঘটে যায় একটি প্রাণঘাতী সংঘর্ষ। এই সংঘর্ষ ছিল ভারত ও চীনের সেনাবাহিনীর মধ্যে হাতাহাতি যুদ্ধ। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ঐ সংঘর্ষে অস্ত্র বিস্ফোরণ করা হয়নি। দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে অস্ত্র বিস্ফোরণ নিষিদ্ধ সংক্রান্ত একটি চুক্তি বিদ্যমান। ফলে সংঘর্ষে ব্যবহৃত হয়েছিল পাথর, লাঠি, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি। ভারতীয় পক্ষ থেকে এই সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন সৈন্য নিহত হয়, চীনা পক্ষের দাবি অনুযায়ী চারজন।
এই ঘটনা ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক দৃষ্টিতে চরমভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল কারণ এটি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে এক গম্ভীর অবনতি সূচিত করেছিল। তবে, সংঘর্ষের প্রকৃত কারণ, পদ্ধতি এবং ফলাফল নিয়ে নানা ধরনের বক্তব্য ও গুজব ছড়িয়ে পড়ে।
বিল হ্যাজার্টির দাবি: ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ
সাম্প্রতিক সময়ে মার্কিন সিনেটর বিল হ্যাজার্টি, যিনি টেনেসি থেকে রিপাবলিকান দলের সদস্য, ঘোষণা করেছেন যে, গালওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের সময় চীন একটি অত্যাধুনিক ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র (Electromagnetic Weapon) ব্যবহার করে ভারতীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে। তার বক্তব্য অনুযায়ী, এই অস্ত্রের প্রভাব এতটাই মারাত্মক ছিল যে, এটি "লিটারালি মেল্ট" করে ফেলেছিল। তিনি স্পষ্ট করেননি এই অস্ত্রের প্রযুক্তিগত বিবরণ বা কীভাবে এটি ব্যবহৃত হয়েছিল, তবে তার এই মন্তব্য বিশ্বব্যাপী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
পূর্বের দাবিগুলোর প্রেক্ষাপট
এই দাবি একদম নতুন নয়। ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের পরপরই চীনের রেনমিন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন ক্যানরং নামক এক প্রফেসর দাবি করেছিলেন যে, চীনা পিপলস লিবারেশন আর্মি (PLA) ভারতের সৈন্যদের পিছু হটানোর জন্য "মাইক্রোওয়েভ অস্ত্র" ব্যবহার করেছিল। তার দাবি ছিল, এই অস্ত্র ব্যবহারের ফলে ভারতীয় সৈন্যদের বমি বমি ভাব দেখা দিয়েছিল এবং তারা দুইটি টিলার শীর্ষ থেকে পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত পরিচালক, জনসংযোগ (ADGPI), এই ধরনের দাবি তাৎক্ষণিকভাবে "ফেক নিউজ" এবং "বেসামাল" বলে খারিজ করেছিল। ভারতীয় মন্ত্রকও এই দাবির প্রতি কোনো সমর্থন প্রকাশ করেনি। এরপরেও, এই ধরনের গুজব ছড়িয়ে পড়তে থাকে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র: একটি প্রযুক্তিগত পর্যালোচনা
ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র (Directed Energy Weapons - DEWs) হল এমন একটি অস্ত্র যা উচ্চমাত্রার কেন্দ্রীভূত ইলেকট্রোম্যাগনেটিক শক্তি ব্যবহার করে লক্ষ্যবস্তু বা শত্রুকে নিষ্ক্রিয় বা ধ্বংস করে। এই অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে:
- লেজার ভিত্তিক অস্ত্র
- মাইক্রোওয়েভ অস্ত্র
- পার্টিকল বিম অস্ত্র
বিভিন্ন দেশ, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন, এবং রাশিয়া, এই ধরনের প্রযুক্তির গবেষণা ও উন্নয়ন করছে। তবে, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্রের প্রভাব সম্পর্কে মুক্তভাবে প্রকাশিত প্রামাণ্য সামগ্রী নেই। বিশেষত "লিটারালি মেল্ট" শব্দটি খুবই শক্তিশালী একটি অভিযোগ। এটি যদি সত্যি হতো, তবে তার দৃশ্যমান প্রমাণ, যেমন গুরুতর দেহাত্মক ক্ষত বা মৃতদেহের অবস্থা আন্তর্জাতিক তদন্তে সামনে আসতো। বর্তমানে এমন কোনো প্রমাণ নেই।
ভারত ও চীনের অফিসিয়াল অবস্থান
এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে কোন মন্তব্য আসেনি। ভারতীয় সেনা কর্তৃপক্ষও স্পষ্টভাবে এই দাবিকে অস্বীকার করেছে। চীন পক্ষ থেকেও এই ধরনের কোনো অস্ত্র ব্যবহারের দাবি কখনো মেনে নেয়া হয়নি। উভয় পক্ষেই এই ধরনের বক্তব্যকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে, মিডিয়া রিপোর্টগুলোতে এই ধরনের দাবি ব্যাপকভাবে আলোচনা করা হয়েছে, বিশেষ করে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, এই ধরনের বক্তব্য সম্ভবত কূটনৈতিকভাবে চিন-ভারত সম্পর্ককে আরও জটিল করার জন্য প্রচার করা হচ্ছে।
কূটনৈতিক প্রেক্ষাপট ও উদ্দেশ্য
সিনেটর হ্যাজার্টির বক্তব্য এসেছে এমন একটি সময়ে যখন ভারত ও চীন শংখলিত সম্পর্ক পুনরায় দৃঢ় করার প্রক্রিয়ায় ছিল। সম্প্রতি শাংঘাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সামিটে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বৈঠকের পটভূমিতে এমন একটি বক্তব্য তৈরি হওয়া আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের বিবৃতি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চীনকে আন্তর্জাতিক অপরাধী রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করার চেষ্টা হতে পারে। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক নীতির প্রেক্ষিতে, চীনকে আক্রমণাত্মকভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে তার অর্থনৈতিক ও সামরিক প্রভাবকে নিরুৎসাহিত করার প্রয়াস হিসেবে এই বক্তব্য গ্রহণ করা যেতে পারে।
সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও বিশ্লেষণ
বর্তমানে, গালওয়ান সংঘর্ষের ঘটনাটি ভারত ও চীন সম্পর্কের এক গভীর কালো দাগ হয়ে রয়েছে। এই সংঘর্ষের পর থেকে সীমান্তে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। উভয় দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ও সেনা উপস্থিতি নিয়ে নিয়মিত উত্তেজনা চলছে। এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন সিনেটরের এই মন্তব্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত হয়ে, ভারতীয় জনগণের মধ্যে চীনের বিরুদ্ধে আরও নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করছে।
অনেকে মনে করছেন, এই ধরনের অব্যর্থ দাবি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে উত্তেজনা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে প্রয়োগ করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দিক থেকে চীনকে বিচ্ছিন্ন করার পরিকল্পনা হতে পারে। অন্যদিকে, ভারতীয় পত্রিকাগুলি এই বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রকাশ করছে কারণ এটি দেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করছে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও কূটনৈতিক মহল চরমভাবে সতর্ক। অনেক বিশ্লেষক মনে করছেন, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্রের মতো উন্নত প্রযুক্তি যদি এমনভাবে ব্যবহৃত হতো, তবে তা নিশ্চিতভাবে আন্তর্জাতিক তদন্ত ও নিরপেক্ষ সংস্থা দ্বারা যাচাই হওয়া উচিত। বর্তমানে কোনো স্বতন্ত্র উৎস বা আন্তর্জাতিক সংস্থা এই দাবি সমর্থন করেনি।
ন্যাটোর মতো সংস্থা বা অন্যান্য আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংস্থা এখনও এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি প্রদান করেনি। ফলে এই দাবির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে বলে অনেকের ধারণা। বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সম্পর্কের জটিলতা বিবেচনায় এই ধরনের বক্তব্যকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
| গালওয়ান সংঘর্ষ: দাবি বনাম বাস্তবতা | ||
|---|---|---|
| বিষয় | মার্কিন সিনেটরের দাবি | আসল ঘটনা ও প্রমাণ |
| সংঘর্ষের ধরন | ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্র ব্যবহার | হাতাহাতি, লাঠি ও পাথরের সংঘর্ষ |
| ভারতীয় সেনারের মৃত্যুর কারণ | শরীর গলিয়ে দেওয়া হয়েছে ("literally melted") | আঘাত, পতন ও হাইপোথার্মিয়া |
| কোনো আগ্নেয়াস্ত্র বা উন্নত অস্ত্র? | হ্যাঁ (ইলেকট্রোম্যাগনেটিক) | না – দুই পক্ষই বন্দুক ব্যবহার করেনি |
| প্রমাণ (ছবি/ভিডিও/ময়নাতদন্ত) | আছে বলে দাবি | কোনো প্রমাণ নেই |
| ভারত সরকার ও সেনার বক্তব্য | নীরব বা গোপন করছে | দাবিটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন |
| চীনের বক্তব্য | স্বীকার করেছে (দ (গোপনে) | হাস্যকর ও মিথ্যা প্রচার |
| উদ্দেশ্য | — | চীন-বিরোধী প্রচারণা ও রাজনৈতিক লাভ |
ভবিষ্যৎ প্রভাব ও উপসংহার
এই ধরনের মন্তব্যের প্রভাব ভবিষ্যতে ভারত ও চীন সম্পর্কের দিক পরিবর্তন করতে পারে। দুই দেশের মধ্যে চলমান সীমান্ত উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। বিশেষ করে যখন ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষের মতো পুরনো বিষয়গুলো পুনরায় আলোচনায় উঠে আসে, তখন তা নতুনভাবে কূটনৈতিক ও সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
ভারতীয় জনসাধারণের মধ্যে চীনবিরোধী মনোভাব আরও প্রবল হতে পারে। আন্তর্জাতিক মঞ্চে চীনের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব গড়ে তোলার লক্ষ্যও থাকতে পারে এই ধরনের বক্তব্যের পেছনে। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক তদন্ত এবং স্বচ্ছতা। প্রমাণ সাপেক্ষে স্পষ্ট করা উচিত এই ধরনের অস্ত্র ব্যবহারের সত্যতা। নাহলে এটি শুধুমাত্র একটি রাজনৈতিক কৌশল হিসেবেই বিবেচিত হবে।
ভারতীয় সরকার, সেনাবাহিনী এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির উচিত এককভাবে তদন্ত করে এই দাবির সত্যতা যাচাই করা। রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডার হাত থেকে দূরে থেকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য নিরপেক্ষভাবে সত্য উদ্ঘাটন করা অত্যন্ত জরুরি। না হলে বিশ্ববাসীকে বিভ্রান্ত করা এবং সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি করা অসম্ভব হবে না।
Fact vs Myth: Galwan Clash & Electromagnetic Weapon Claim
❌ MYTH
China used electromagnetic weapons in the 2020 Galwan clash to “literally melt” Indian soldiers.
✓ FACT
No advanced or directed-energy weapons were used. The clash involved only hand-to-hand combat, stones, clubs, and iron rods. Both India and China officially deny any such claims.
❌ MYTH
Indian soldiers’ bodies were melted by Chinese microwave or laser weapons.
✓ FACT
Casualties resulted from blunt force trauma, falls from heights, and hypothermia after falling into the freezing Galwan River. No burn marks, melting, or radiation injuries were ever reported or documented.
❌ MYTH
The Indian government is hiding the truth about electromagnetic weapons.
✓ FACT
Indian Army, Ministry of External Affairs, and multiple official statements have repeatedly called the claim “baseless” and “false propaganda.”
Source: Banglaa Facts Analysis – September 2025
Key Terms & Glossary
Violent hand-to-hand conflict between Indian and Chinese troops on 15–16 June 2020 in the Galwan Valley, Ladakh. No firearms were used — only stones, clubs, and iron rods.
Directed-energy weapon that uses high-power microwaves, lasers, or electromagnetic pulses (EMP) to disable electronics or affect personnel. No publicly verified weapon exists that can “melt” human bodies.
U.S. Republican Senator from Tennessee. In 2025, he claimed China used electromagnetic weapons in Galwan to “literally melt” Indian soldiers.
Exact phrase used by Sen. Hagerty — meaning bodies were allegedly melted by directed energy. No photographic, medical, or forensic evidence supports this.
Primary cause of many Indian casualties — soldiers fell into the freezing Sub-Zero°C Galwan River at night, leading to fatal loss of body heat.
India–China bilateral protocols that prohibit the use of firearms within 2 km of the Line of Actual Control (LAC). Both sides strictly followed this during the Galwan clash.
Source: Banglaa Facts Analysis – September 2025