বাংলার প্রাচীন ইতিহাসে “শশাঙ্ক” নামটি এক বিশেষ মর্যাদা ধারণ করে। তিনি ছিলেন বাংলার প্রথম স্বাধীন শাসক—একীভূত গৌড় রাজ্যের (Gauda Kingdom) প্রতিষ্ঠাতা। খ্রিষ্টীয় ষষ্ঠ শতকের শেষ থেকে সপ্তম শতকের প্রথমার্ধ পর্যন্ত, অর্থাৎ আনুমানিক ৫৯০ থেকে ৬২৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তাঁর শাসনকাল, ছিল উত্তর গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনোত্তর ভারতের রাজনৈতিক পুনর্গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ যুগ। শশাঙ্ক শুধু একজন সামরিক বীরই ছিলেন না; তিনি ছিলেন প্রশাসক, কূটনীতিক এবং বাংলার আঞ্চলিক পরিচয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপক।
রাজা শশাঙ্ক কে? (Who was King Shashanka?)
রাজা শশাঙ্ক (খ্রিস্টাব্দ ৫৯০–৬২৫) ছিলেন বাংলার প্রথম স্বাধীন শাসক এবং গৌড় রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা। গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের পর তিনি মহাসামন্ত থেকে উত্থান লাভ করে কর্ণসুবর্ণকে রাজধানী করে ‘মহারাজাধিরাজ’ উপাধি গ্রহণ করেন। তিনি শৈব ধর্মের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন এবং বাংলার আঞ্চলিক পরিচয়ের ভিত্তি স্থাপন করেন।
গৌড় রাজ্যে কোন কোন অঞ্চল ছিল? (Territories of Gauda Kingdom)
- গৌড় অঞ্চল (উত্তর ও পশ্চিমবঙ্গ)
- মগধ (বর্তমান বিহার)
- ওড়িশার বিশাল অংশ (গঞ্জামসহ)
- অসমের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশ
শশাঙ্কের শাসনে এই অঞ্চলগুলি একীভূত হয়ে পূর্ব ভারতের শক্তিশালী রাজ্য গঠন করে।
শশাঙ্কের শাসনকালের টাইমলাইন (Timeline of Shashanka's Reign)
| সাল | গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা |
|---|---|
| ৫৯০ খ্রি. | গুপ্তদের অধীনে মহাসামন্ত হিসেবে উত্থান |
| ৬০৫ খ্রি. | স্বাধীনতা ঘোষণা ও গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা |
| ৫৯৫–৬০০ খ্রি. | কামরূপ (অসম) অভিযান |
| ৬০৬ খ্রি. | রাজ্যবর্ধনের হত্যা ও হর্ষবর্ধনের সঙ্গে সংঘর্ষ |
| ৬২৫ খ্রি. | মৃত্যু – রাজ্য শীর্ষে পৌঁছায় |
সূত্র: বাংলা ফ্যাক্টস, ২০২৫
🔶 গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতন ও শশাঙ্কের উত্থান
গুপ্ত সাম্রাজ্যের পতনের (খ্রিঃ ৪৬৭ সালে স্কন্দগুপ্তের মৃত্যুর পর) পর উত্তর ভারতে কেন্দ্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ে। হূণদের (Hun) বারবার আক্রমণ, অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা ও আঞ্চলিক বিদ্রোহের ফলে ভারত অসংখ্য ক্ষুদ্র রাজ্যে বিভক্ত হয়ে যায়। এই শূন্যতার মধ্যে একদা শক্তিশালী পরবর্তী গুপ্ত রাজবংশ (Later Guptas) দুর্বলভাবে টিকে ছিল—বিশেষ করে রাজা মহাসেনগুপ্ত (খ্রিঃ ৫৬২–৬০১)-এর সময়ে।
ঐতিহাসিক সূত্রে জানা যায়, শশাঙ্ক প্রথমে মহাসেনগুপ্তের অধীনস্থ এক মহাসামন্ত (feudatory chief) ছিলেন। কিন্তু গুপ্তদের দুর্বলতা কাজে লাগিয়ে তিনি ধীরে ধীরে নিজের শক্তি বৃদ্ধি করেন। আনুমানিক ৬০৫ খ্রিষ্টাব্দে মহাসেনগুপ্তের মৃত্যুর পর শশাঙ্ক নিজের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং গৌড় রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর রাজধানী ছিল কর্ণসুবর্ণ (বর্তমান মুর্শিদাবাদ জেলা)। এখান থেকেই তিনি স্বর্ণমুদ্রা প্রচলন করে “মহারাজাধিরাজ” উপাধি গ্রহণ করেন—যা ছিল এক স্বাধীন সম্রাটের প্রতীক।
🔶 গৌড় রাজ্যের বিস্তৃতি ও রাজনৈতিক কাঠামো
শশাঙ্কের গৌড় রাজ্য ছিল তৎকালীন পূর্ব ভারতের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক শক্তি। তাঁর শাসনের অধীনে আসে:
- গৌড় অঞ্চল (বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ও পশ্চিমাংশ),
- মগধ (বিহার),
- ওড়িশার বিশাল অংশ (বিশেষত গঞ্জাম অঞ্চল),
- এবং উত্তর-পূর্বে অসমের কিছু অংশ পর্যন্ত।
ওড়িশায় শশাঙ্ক তাঁর ভাসাল রাজা শৈলোদ্ভব বংশের মধ্যভর্মন-এর মাধ্যমে শাসন পরিচালনা করতেন।
এই বিশাল সাম্রাজ্যকে কেন্দ্র করে তিনি এমন এক প্রশাসনিক কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন, যা পরবর্তী পাল রাজাদের জন্য আদর্শ হয়ে ওঠে।
গৌড় শব্দটি ধীরে ধীরে “বাংলা” বা “বঙ্গ”-এর সমার্থক রাজনৈতিক পরিচয়ে পরিণত হয়।
🔶 সামরিক অভিযান ও কূটনৈতিক সংঘাত
শশাঙ্কের শাসনকাল ছিল যুদ্ধ ও কূটনীতির নাটকীয় সময়।
⚔️ কামরূপ অভিযান
খ্রিষ্টীয় ৫৯৫–৬০০ সালের মধ্যে তিনি কামরূপ রাজ্যের বর্মন রাজাদের (King Susthitavarman ও উত্তরসূরিরা) বিরুদ্ধে অভিযান চালান। এতে গৌড় রাজ্যের উত্তর-পূর্ব সীমা সুরক্ষিত হয়।
⚔️ রাজ্যবর্ধনের হত্যাকাণ্ড (৬০৬ খ্রিঃ)
সবচেয়ে বিতর্কিত ঘটনা হলো রাজ্যবর্ধন (Thanesar-এর রাজা)-এর মৃত্যু। ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে—কেউ বলেন এটি শশাঙ্কের কূটনৈতিক ষড়যন্ত্রের ফল, কেউ বলেন সরাসরি হত্যাকাণ্ড। এই ঘটনার ফলে শশাঙ্ক তাঁর পশ্চিম সীমা সুরক্ষিত করতে সক্ষম হন।
⚔️ হর্ষবর্ধনের সঙ্গে সংঘর্ষ
রাজ্যবর্ধনের ভাই হর্ষবর্ধন (শাসনকাল ৬০৬–৬৪৭) শশাঙ্কের প্রধান শত্রুতে পরিণত হন। হর্ষ প্রতিশোধ নিতে কামরূপের ভাস্করবর্ধন-এর সঙ্গে জোট বাঁধেন এবং গৌড়ে আক্রমণ চালান। তবে শশাঙ্কের সামরিক শক্তি ও কৌশলের কারণে হর্ষ কখনোই তাঁকে বাংলার সিংহাসনচ্যুত করতে পারেননি। দুই রাজ্যের মধ্যে প্রায় তিন দশক ধরে এক অমীমাংসিত প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলেছিল।
⚔️ মালব রাজ্যের সঙ্গে জোট
শশাঙ্কের কূটনৈতিক মেধা ছিল অসাধারণ। তিনি মালবার দেবগুপ্ত-এর সঙ্গে জোট বাঁধেন, যা হর্ষ-ভাস্করবর্ধন জোটের মোকাবিলায় ভারসাম্য রক্ষা করে। এই নীতির ফলে গৌড় সাম্রাজ্য দীর্ঘদিন টিকে থাকে।
🔶 প্রশাসন ও শাসননীতি
শশাঙ্ক প্রশাসনিক দিক থেকে গুপ্ত ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখেন। তিনি ভূমিদান নীতি অব্যাহত রাখেন—বিশেষত ব্রাহ্মণ সম্প্রদায়কে ভূমি অনুদান দেওয়ার প্রথা। এর প্রমাণ মেলে তাঁর শাসনকালের তাম্রলিপি শিলালেখে।
মেদিনীপুর ও এগরা অঞ্চলে পাওয়া তাম্রলিপিগুলিতে দেখা যায়, তিনি তাঁর অষ্টম ও দশম রাজ্যবর্ষে ভূমিদান করেন। এতে স্থানীয় প্রশাসনিক পদ, জমির পরিমাণ, দাতার নাম, ও ধর্মীয় উদ্দেশ্যের বিবরণ উল্লেখ থাকে—যা তাঁর সুশৃঙ্খল প্রশাসনের প্রমাণ।
রাজ্যের রাজধানী কর্ণসুবর্ণে ছিল রাজপ্রাসাদ, প্রশাসনিক দপ্তর, এবং সামরিক সদর। এই নগরটি বাণিজ্য ও সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবেও পরিচিত ছিল।
🔶 অর্থনীতি ও মুদ্রানীতি
গৌড় রাজ্যের অর্থনৈতিক শক্তি শশাঙ্কের স্বর্ণ ও রৌপ্য মুদ্রা (দিনার)-এ প্রতিফলিত হয়।
এই মুদ্রাগুলিতে এক পাশে শিবলিঙ্গ বা ত্রিশূল এবং অপর পাশে লক্ষ্মীদেবীর চিত্র দেখা যায়। এতে স্পষ্ট যে রাজা তাঁর ধর্মীয় আনুগত্য ও রাজশক্তি—উভয়কেই প্রতীকায়িত করতে চেয়েছেন।
এই মুদ্রাগুলি শুধু অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অংশই নয়, রাজনৈতিক বৈধতার প্রতীক হিসেবেও কাজ করেছে—যেমন গুপ্ত যুগে হয়েছিল।
🔶 সংস্কৃতি ও ক্যালেন্ডার ব্যবস্থা
বাংলা ক্যালেন্ডার বা বাংলা সন-এর সূচনা নিয়ে ঐতিহাসিকদের মধ্যে বিতর্ক থাকলেও, বহু গবেষক মনে করেন এর সূত্রপাত শশাঙ্কের রাজত্বকালেই।
এই ক্যালেন্ডার পরে মুসলিম শাসনামলে সংস্কার হয়ে “বাংলা সন” নামে জনপ্রিয়তা পায়।
ফলে শশাঙ্ককে বাংলার ক্যালেন্ডার সংস্কৃতির প্রাথমিক রূপকার হিসেবেও গণ্য করা যায়।
🔶 ধর্মনীতি ও ধর্মীয় জীবন
শশাঙ্ক ছিলেন একজন দৃঢ় শৈব ধর্মানুরাগী। তিনি শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন, ব্রাহ্মণ ও বৈদিক আচার্যদের আমন্ত্রণ জানান, বিশেষত কান্যকুব্জ অঞ্চল থেকে শাকদ্বীপী ব্রাহ্মণদের বসতি স্থাপন করান।
তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় বর্তমান ভুবনেশ্বর অঞ্চলে প্রাচীনতম শিবমন্দির ত্রিভুবনেশ্বর মন্দির নির্মিত হয়, যা পরবর্তীকালে একাদশ শতকে লিঙ্গরাজ মন্দিরে রূপান্তরিত হয়।
🕉️ বৌদ্ধধর্মের সঙ্গে দ্বন্দ্ব
চীনা ভিক্ষু হিউয়েন সাং (Xuanzang) তাঁর ভ্রমণবৃত্তান্তে উল্লেখ করেছেন যে, শশাঙ্ক ছিলেন “বৌদ্ধ ধর্মের শত্রু”। তাঁর রাজ্যে নাকি বহু বৌদ্ধ বিহার ধ্বংস করা হয় এবং বোধগয়ার বোধিবৃক্ষ কেটে সেখানে শিবমূর্তি স্থাপন করা হয়।
আর্যমান্জুশ্রীমূলকাল্প নামক বৌদ্ধ গ্রন্থেও শশাঙ্কের এই নির্যাতনের উল্লেখ আছে।
তবে আধুনিক ঐতিহাসিকরা বলেন—এই বিবরণ কিছুটা পক্ষপাতদুষ্ট হতে পারে, কারণ হিউয়েন সাং ছিলেন শশাঙ্কের প্রতিদ্বন্দ্বী হর্ষবর্ধনের সভানত। তবু এটা স্পষ্ট যে, শশাঙ্কের রাজত্বে ব্রাহ্মণ্যধর্ম ও শৈব উপাসনা ছিল প্রাধান্যশালী, আর বৌদ্ধধর্ম তুলনামূলকভাবে উপেক্ষিত।
🔶 পতন ও পরবর্তী অরাজকতা
খ্রিষ্টীয় ৬২৫–৬২৬ সালের দিকে শশাঙ্কের মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র মানব (Manava) সিংহাসনে বসলেও মাত্র আট মাস রাজত্ব করতে পেরেছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পর রাজ্য ভেঙে পড়ে এবং সর্বত্র গৃহযুদ্ধ শুরু হয়।
এই অবস্থাকে পরবর্তী পাল শিলালিপিতে বলা হয়েছে—“মৎস্যন্যায়” (অর্থাৎ “বড় মাছ ছোট মাছকে খায়”)।
শাসনশূন্য এই সময়ে হর্ষবর্ধন ও ভাস্করবর্ধন যৌথ বাহিনী নিয়ে বাংলায় প্রবেশ করেন ও গৌড় ধ্বংস করেন। ফলে শশাঙ্ক নির্মিত ঐক্য সম্পূর্ণ ভেঙে যায়।
এই বিশৃঙ্খলা প্রায় একশ বছর স্থায়ী হয়, যতদিন না অষ্টম শতকে পাল সাম্রাজ্যের উত্থান ঘটে।
তবে পাল রাজারা নিজেরা শশাঙ্কের উপাধি “গৌরেশ্বর” বা “গৌড়াধিপতি” গ্রহণ করেন—যা প্রমাণ করে, তাঁর প্রতিষ্ঠিত ঐক্য ও মর্যাদা ইতিহাসে অমোচনীয় ছিল।
🔶 শশাঙ্কের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব
শশাঙ্ক ছিলেন এক পরিবর্তনকালীন রাজা—যিনি গুপ্ত যুগের পতন ও মধ্যযুগের সূচনার সেতুবন্ধন তৈরি করেন।
তাঁর কৃতিত্ব তিনটি দিক থেকে অনন্য:
- রাজনৈতিক ঐক্য: তিনি পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্ন রাজ্যগুলিকে একত্রিত করে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীভূত রাজ্য গঠন করেন।
- আঞ্চলিক চেতনা: তাঁর শাসনে “গৌড়” নামটি সমগ্র বাংলার রাজনৈতিক পরিচয়ে রূপ নেয়, যা পরবর্তী যুগে “বঙ্গ” নামে টিকে থাকে।
- সংস্কৃতি ও ধর্ম: শৈবধর্ম ও ব্রাহ্মণ্য সমাজের পুনরুজ্জীবনের মাধ্যমে তিনি উত্তর ভারতে ধর্মীয় ভারসাম্য ফিরিয়ে আনেন।
ঐতিহাসিক অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় মন্তব্য করেছিলেন—
“শশাঙ্কের শাসনে ‘গৌড়’ নামটি শুধু একটি রাজ্য নয়, সমগ্র বাংলার সাংস্কৃতিক পরিচয়ে পরিণত হয়েছিল।”
তাঁর সৃষ্ট রাজনৈতিক কাঠামোই পরবর্তীতে পাল, সেন, এমনকি মুসলিম সুলতানদের রাজ্যসীমার ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
অর্থাৎ, শশাঙ্ক ছিলেন বাংলার প্রথম জাতীয় শাসক—যিনি রাজনৈতিক স্বাধীনতা, আঞ্চলিক পরিচয় ও প্রশাসনিক ঐক্য—এই তিনটি স্তম্ভে বাংলার ইতিহাসের প্রথম অধ্যায়টি লিখে দেন।
People Also Ask
সূত্র: বাংলা ফ্যাক্টস ব্লগ, ২০২৫
🔶 উপসংহার
শশাঙ্কের মৃত্যুতে গৌড় রাজ্যের পতন ঘটলেও, তাঁর উত্তরাধিকার মুছে যায়নি।
তিনি যে “একীভূত বাংলা”-র স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেটি পরে পাল, সেন ও অন্যান্য রাজবংশে পূর্ণতা পায়।
তাঁর মুদ্রা, তাম্রলিপি, মন্দির ও কিংবদন্তি আজও বাংলার প্রাচীন গৌরবের সাক্ষ্য বহন করে।
বাংলার ইতিহাসে শশাঙ্ক কেবল এক শাসক নন—তিনি বাংলার স্বাধীনতার প্রতীক, রাজনৈতিক চেতনার অগ্রদূত, এবং বাংলা সংস্কৃতির ভিত্তি স্থাপক।
| বিষয় | গুপ্ত সাম্রাজ্য (৩২০–৫৫০ খ্রিস্টাব্দ) |
রাজা শশাঙ্ক (৫৯০–৬২৫ খ্রিস্টাব্দ) |
হর্ষবর্ধন (৬০৬–৬৪৭ খ্রিস্টাব্দ) |
|---|---|---|---|
| রাজধানী | পাটলিপুত্র | কর্ণসুবর্ণ | কনৌজ |
| রাজ্যের বিস্তার | উত্তর ভারত, মধ্য ভারত, গুজরাট | গৌড়, মগধ, ওড়িশা, অসমের অংশ | কনৌজ থেকে নর্মদা পর্যন্ত |
| উত্থানের পটভূমি | স্থানীয় শাসক থেকে সম্রাট | গুপ্তদের মহাসামন্ত → স্বাধীন শাসক | থানেশ্বরের রাজা → সম্রাট |
| উপাধি | মহারাজাধিরাজ | মহারাজাধিরাজ (প্রথম বাঙালি) | শীলাদিত্য |
| ধর্মীয় নীতি | হিন্দু (বৈষ্ণব), বৌদ্ধ পৃষ্ঠপোষকতা | শৈব ধর্মের পৃষ্ঠপোষক, বৌদ্ধবিরোধী অভিযোগ | বৌদ্ধ ধর্মের প্রবল সমর্থক |
| বাংলার ভূমিকা | প্রাদেশিক অংশ | প্রথম স্বাধীন বাংলার রাজা | বাংলা জয়, কিন্তু রাজধানী বাইরে |
| সামরিক শক্তি | হুনদের পরাজয় | গজসেনা, নৌবাহিনী, থানেশ্বর আক্রমণ | শশাঙ্কের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ |
সূত্র: বাংলা ফ্যাক্টস ব্লগ, ২০২৫
