🔹 ভূমিকা
২০২৫ সালের ২৭ অক্টোবর মস্কো শহরে ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান নির্মাতা হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) এবং রাশিয়ার ইউনাইটেড এয়ারক্রাফ্ট কর্পোরেশন (UAC) এর মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) ভারতের বিমান শিল্পে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। এই চুক্তির মাধ্যমে HAL ভারতে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ যাত্রীবাহী বিমান SJ-100 (Sukhoi Superjet-100) উৎপাদনের অধিকার পেয়েছে।
এটি শুধু একটি ব্যবসায়িক চুক্তি নয়; বরং এটি ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ (Aatmanirbhar Bharat) নীতির অধীনে বেসামরিক বিমান খাতে আত্মনির্ভরতার পথে এক বড় পদক্ষেপ।
🔹 চুক্তির মূল দিক
এই MoU অনুযায়ী HAL ভারতে SJ-100 সিভিল কমিউটার এয়ারক্রাফ্ট তৈরি করবে, যা ৮৭ থেকে ১০৮ জন যাত্রী বহন করতে সক্ষম। বিমানটির সর্বোচ্চ পরিসীমা ৩,০৪৮ থেকে ৪,৫৭৮ কিলোমিটার এবং ক্রুজিং গতি প্রায় Mach 0.78–0.81 (প্রায় ৮৩০–৮৬০ কিমি/ঘণ্টা)। বর্তমানে এই মডেলের ২০০টিরও বেশি বিমান বিশ্বজুড়ে ১৬টিরও বেশি বাণিজ্যিক এয়ারলাইনে পরিচালিত হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষর করেন HAL-এর তরফে প্রভাত রঞ্জন এবং রাশিয়ার তরফে ওলেগ বোগোমোলভ। উপস্থিত ছিলেন HAL চেয়ারম্যান ডি.কে. সুনীল এবং UAC-এর মহাপরিচালক ভাদিম বাদেকা।
এটি ১৯৬১ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত উৎপাদিত HAL-এর AVRO HS-748-এর পর প্রথম পূর্ণাঙ্গ যাত্রীবাহী বিমান যা ভারতের মাটিতে তৈরি হবে।
🔹 ভারতের বেসামরিক বিমান খাতের জন্য এর গুরুত্ব
✈️ ১. আঞ্চলিক সংযোগ বৃদ্ধিতে নতুন দিগন্ত
এই প্রকল্পটি ভারতের UDAN (উড়ান) স্কিমের লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য — দেশের টিয়ার-২ ও টিয়ার-৩ শহরগুলোকে সাশ্রয়ী মূল্যে বিমানপথে সংযুক্ত করা।
২০১৬ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পে এখন পর্যন্ত ৬৩৭টি রুট চালু, ৯২টি বিমানবন্দর সংযুক্ত, এবং ১.৫৬ কোটিরও বেশি যাত্রী ৩.২৩ লক্ষ ফ্লাইটে ভ্রমণ করেছেন। কেন্দ্র সরকার ঘোষণা করেছে যে, ২০২৭ সালের পরেও প্রকল্পটি আরও ১২০টি নতুন গন্তব্যে সম্প্রসারিত হবে।
SJ-100 আকারে ছোট ও অর্থনৈতিকভাবে কার্যকর হওয়ায় এই প্রকল্পের আওতায় এটি “গেম-চেঞ্জার” হতে পারে।
🛫 ২. ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে দেশীয় উৎপাদন
ভারতের অভ্যন্তরীণ বিমান বাজারে আগামী এক দশকে অন্তত ২০০টি আঞ্চলিক জেট বিমান এবং ৩৫০টি স্বল্প-দূরত্বের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের উপযুক্ত বিমান প্রয়োজন হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে ভারতের বিমানবাহী সক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে এবং এই সময় গড় বার্ষিক বৃদ্ধি ছিল ৬.৯%। বর্তমানে ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম বেসামরিক বিমান বাজার এবং সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল দেশীয় বিমান চলাচল কেন্দ্র।
🏭 ৩. আত্মনির্ভর ভারত ও কর্মসংস্থান
স্থানীয়ভাবে বিমান উৎপাদন শুরু হলে হাজার হাজার সরাসরি ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। একইসঙ্গে এটি বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বাড়াবে — বিশেষত অ্যাভিওনিক্স, ইঞ্জিনিয়ারিং, ও মেইনটেন্যান্স খাতে।
HAL জানিয়েছে, এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ভারতের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ নীতিকে বাস্তবায়িত করা এবং দীর্ঘদিনের বিদেশনির্ভর আমদানি ব্যবস্থাকে হ্রাস করা।
⚙️ ৪. প্রতিরক্ষা থেকে বেসামরিক রূপান্তর
HAL এতদিন মূলত প্রতিরক্ষা খাতের বিমান তৈরি করেই পরিচিত — যেমন Su-30MKI, MiG-21, MiG-27, Tejas LCA ইত্যাদি। কিন্তু এখন তারা সেই সামরিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বেসামরিক বিমান খাতে প্রবেশ করছে।
তবে HAL-এর বর্তমানে ₹২.৭ লাখ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা অর্ডারের ব্যাকলগ রয়েছে, যার ফলে বাণিজ্যিক উৎপাদনে পূর্ণ মনোনিবেশ করা তাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
🔹 ভূরাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক তাৎপর্য
🌍 ১. Boeing–Airbus আধিপত্যে আঘাত
বিশ্বের বাণিজ্যিক বিমানবাজারে গত তিন দশক ধরে Boeing ও Airbus প্রায় ৯৯% বাজার দখল করে রেখেছে। ভারতে Airbus-এর প্রভাব বিশেষভাবে বেশি কারণ IndiGo-এর অধিকাংশ বিমান Airbus-এর।
HAL-Russia চুক্তি ভারতের প্রথম বড় প্রচেষ্টা এই পশ্চিমা দ্বৈত আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে, যদিও SJ-100 সরাসরি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে Embraer E175 ও Airbus A220 শ্রেণির বিমানের সঙ্গে।
🇮🇳 ২. কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের প্রতিফলন
এই চুক্তি ভারতের Strategic Autonomy নীতির একটি উদাহরণ। ভারত একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রনেতৃত্বাধীন Quad-এর সদস্য, আবার রাশিয়া-ঘনিষ্ঠ BRICS ও Shanghai Cooperation Organisation (SCO)-এরও গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।
ভারত বরাবরই স্পষ্ট করেছে যে, সে কোনও একক ব্লকের অধীন নয় এবং জাতীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেবে।
💰 ৩. নিষেধাজ্ঞা ও কূটনৈতিক উত্তেজনা
রাশিয়ার UAC সংস্থাটি ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্যের কঠোর নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে।
তবুও ভারত এমন একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করে একটি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে — নির্ভরতা নয়, নীতিনিষ্ঠ স্বার্থই ভারতের অগ্রাধিকার।
তবে এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক কিছুটা জটিল হতে পারে, বিশেষত ২০২৫ সালে ট্রাম্প প্রশাসন ভারতের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপ করার পর।
📈 ৪. ভারত-রাশিয়া অর্থনৈতিক সম্পর্ক
২০২৪-২৫ অর্থবছরে ভারত-রাশিয়া দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য দাঁড়ায় ৬৮.৭ বিলিয়ন ডলার, যার বেশিরভাগই রুশ তেলের আমদানি থেকে এসেছে। ভারতের রপ্তানি ছিল মাত্র ৪.৮৮ বিলিয়ন ডলার।
অক্টোবর ২০২৫-এ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে, তিনি ভারতের সঙ্গে “trade deal” করতে চান এবং মোদির নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন — ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা চলমান।
🔹 যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কের প্রভাব
🇺🇸 যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন
এই চুক্তি ভারতের জন্য কূটনৈতিক ভারসাম্যের পরীক্ষা হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এটিকে রুশ নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর পদক্ষেপ হিসেবে দেখতে পারে, যা তাদের কৌশলগত নীতির পরিপন্থী।
তবে ভারত বারবার জানিয়েছে যে, তারা একতরফা নিষেধাজ্ঞা মেনে চলে না এবং পশ্চিমাদের “দ্বৈত মানদণ্ড” নিয়ে আপত্তি রয়েছে।
🇷🇺 রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর
রাশিয়া এখনও ভারতের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা অংশীদার। ২০২০–২০২৪ সালে ভারতের ৩৬% অস্ত্র আমদানি এসেছে রাশিয়া থেকে, যেখানে ফ্রান্স ৩৩% এবং ইসরায়েল ১৩%।
T-90 ট্যাঙ্ক, Su-30MKI যুদ্ধবিমান, BrahMos মিসাইল, AK-203 রাইফেল এবং INS Vikramaditya বিমানবাহী রণতরী — সবই দুই দেশের যৌথ প্রকল্পের উদাহরণ।
২০২৫ সালের মে মাসে অপারেশন সিন্দুর-এ পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিহত করতে ভারতের S-400 এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহারের সাফল্যও রাশিয়ার প্রযুক্তিগত সহায়তার প্রমাণ।
রাশিয়া ২০২৭ সালের মধ্যে পাঁচটি S-400 সরবরাহ সম্পূর্ণ করবে এবং বর্তমানে Su-57 পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমান নিয়ে আলোচনাও চলছে।
🤝 আসন্ন পুতিন সফর
২০২৫ সালের ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্মেলনে অংশ নিতে আসছেন। এটি হবে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর তার প্রথম ভারত সফর।
এই সফরে দুই দেশের মধ্যে জ্বালানি, প্রতিরক্ষা, সংযোগ ও বাণিজ্য সহযোগিতা পর্যালোচনা করা হবে। পুতিন প্রকাশ্যে মোদির প্রশংসা করে বলেছেন — “তিনি এক অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ ও জাতীয়তাবাদী নেতা।”
🔹 ভারতের বিমান শিল্পে সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ
🧩 আমদানিনির্ভরতা থেকে মুক্তি
বহু দশক ধরে ভারত সম্পূর্ণভাবে বিদেশি প্রস্তুত বিমান আমদানির ওপর নির্ভরশীল। HAL-UAC চুক্তি সেই নির্ভরতা কমানোর এক বড় পদক্ষেপ।
বর্তমানে IndiGo, Air India, SpiceJet ইত্যাদি এয়ারলাইনের বিমান প্রায় পুরোটাই Airbus বা Boeing-এর। দেশীয় উৎপাদন শুরু হলে ভারতে মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও প্রযুক্তি হস্তান্তর সম্ভব হবে।
🛠️ প্রযুক্তি অর্জনের নতুন সুযোগ
SJ-100 উৎপাদনের মাধ্যমে ভারত একটি প্রমাণিত ডিজাইনের অধিকার পাবে, যা থেকে দেশীয় প্রকৌশলীরা শেখার সুযোগ পাবেন।
চীনের COMAC C919 প্রকল্পের অভিজ্ঞতা দেখিয়েছে — একটি নতুন বাণিজ্যিক বিমান তৈরি করতে কয়েক দশক লেগে যায় এবং বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়।
ভারত এই প্রক্রিয়ার কঠিন প্রাথমিক ধাপগুলো এড়িয়ে দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে।
⚠️ প্রকল্পের চ্যালেঞ্জ ও অনিশ্চয়তা
SJ-100 প্রকল্প বর্তমানে একাধিক কারিগরি সমস্যার মুখোমুখি। বিমানটির পূর্ববর্তী SaM146 ইঞ্জিন (ফ্রান্স-রাশিয়া যৌথ উদ্যোগ) নিষেধাজ্ঞার কারণে আর উৎপাদিত হচ্ছে না।
রাশিয়া নতুন PD-8 ইঞ্জিন তৈরি করেছে, কিন্তু সেটিও এখনও সার্টিফিকেশনের পর্যায়ে এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার আওতায়। প্রায় ৪০টি বিদেশি যন্ত্রাংশ এখনো রাশিয়ায় প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায়।
এছাড়া, SJ-100-এর সেফটি রেকর্ডও প্রশ্নবিদ্ধ — ১৪ বছরে ৯৫টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।
DGCA-র (Directorate General of Civil Aviation) সার্টিফিকেশন প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ হতে পারে। প্রকল্পের বিনিয়োগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর, উৎপাদন কেন্দ্র — এসব বিষয়ে সরকার বা HAL এখনও বিস্তারিত জানায়নি।
🔹 প্রতীকী ও কৌশলগত মূল্য
এই প্রকল্পকে অনেক বিশ্লেষক “লো-স্টেকস টেস্ট কেস” হিসেবে দেখছেন — যেখানে ভারত ও রাশিয়া প্রথমে বেসামরিক ক্ষেত্রে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়ানোর উপায় পরীক্ষা করছে।
এই ধরনের লেনদেন রুপি-রুবল ভিত্তিক অর্থপ্রদানের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটানোরও সম্ভাবনা তৈরি করে।
🔹 ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গি
যদি SJ-100 প্রকল্প সফল হয়, তবে এটি ভারতের জন্য একটি বৃহত্তর দেশীয় বিমান শিল্প ইকোসিস্টেম তৈরির ভিত্তি হতে পারে।
HAL ইতিমধ্যেই Dornier 228 ও ১৯-সিটের ছোট বিমান তৈরি করছে। ভবিষ্যতে এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভারত নিজস্ব আঞ্চলিক বিমান ডিজাইন ও রপ্তানি করতে পারবে।
তবে এর জন্য প্রয়োজন —
- প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতা
- সার্টিফিকেশন অর্জন
- বাজারে প্রতিযোগিতা ধরে রাখা
- এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখা।
🛩️ উপসংহার
HAL-Russia চুক্তি কেবল একটি বাণিজ্যিক চুক্তি নয়, এটি ভারতের ভূরাজনৈতিক আত্মবিশ্বাস ও প্রযুক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতীক।
এটি দেখিয়েছে যে, ভারত চাইলে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া—দুই দিকেই কৌশলগত ভারসাম্য বজায় রেখে নিজের শিল্প ও অর্থনৈতিক স্বার্থ এগিয়ে নিতে পারে।
তবে প্রকল্পটি সফল হবে কিনা তা নির্ভর করবে — নিষেধাজ্ঞা মোকাবিলা, প্রযুক্তি স্থানীয়করণ, নিরাপত্তা সার্টিফিকেশন, এবং বাজারে টিকে থাকার ক্ষমতার ওপর।
যদি এসব বাধা অতিক্রম করা যায়, তবে SJ-100 প্রকল্প ভারতের জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে — যেখানে ভারত শুধু বিমান আমদানিকারক নয়, বরং বিমান নির্মাতা ও রপ্তানিকারক দেশ হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করবে।
