১. চুড়োরাজ্যের দাবিদার: 'রাষ্ট্রকূট' মানে 'রাজ্যগুলির মধ্যে শীর্ষে,' আর এ নামটিই তুলে ধরে এই রাজবংশের উচ্চাকাঙ্ক্ষা। দক্ষিণ ভারতের দেকনের বেশিরভাগ অংশে তাদের কর্তৃত্ব ছিল। তাদের রাজধানী ছিল কর্ণাটকের মন্যখেত, এবং তাঁরা দক্ষিণ ভারতের বেশিরভাগ অংশ, মালওয়া ও গুজরাটের কিছু অংশ পর্যন্ত তাদের শাসন বিস্তৃত করেন।
২. খড়গের খেলায় অতুলনীয়: রাষ্ট্রকূট রাজবংশের রাজারা শক্তিশালী ও দক্ষ যোদ্ধা ছিলেন। সাম্রাজ্যের উন্নতি ও সুরক্ষায় তাঁরা বিভিন্ন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন, যার মধ্যে পাল্লাব রাজবংশ ও চোল রাজবংশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অন্যতম উল্লেখযোগ্য।
৩. শিল্প ও স্থাপত্যের পৃষ্ঠপোষক: রাষ্ট্রকূট রাজারা শিল্প ও স্থাপত্যের অন্যতম প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। এলোরা গুহা মন্দির, বাদামি শিব মন্দির এবং কৈলাসনাথ মন্দিরের মতো স্মৃতিসৌধগুলি তাদের শৈলী ও দক্ষতার নিদর্শন।
৪. সমন্বয়ের মহিমা: রাষ্ট্রকূট রাজারা বৈচিত্র্য স্বাগত জানাতেন। হিন্দু, বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্মগুলি সবই তাদের রাজত্বে সমৃদ্ধ হয়েছিল। এমনকি পারসিয়ান সংস্কৃতির প্রভাবও দেখা যায় তাদের শিল্পকলায়।
৫. কন্নড় ভাষার উন্নতি: রাষ্ট্রকূট রাজারা কন্নড় ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের আমলে রচিত কাব্যগ্রন্থ, শিলালিপি ও মন্দির গীতগুলি আজও কন্নড় ভাষার ঐতিহ্যকে সমৃদ্ধ করে।
৬. বিজ্ঞান ও দর্শনের আশ্রয়: রাষ্টকূট রাজারা বিজ্ঞান ও দর্শনের গবেষণাকেও উৎসাহিত করেছিলেন। বিখ্যাত জ্যোতির্বিজ্ঞানী আর্যভট্ট তৃতীয় তাদের রাজত্বে বাস করতেন এবং লেখালেখি করতেন।
৭. প্রশাসনিক দক্ষতা: রাষ্টকূট রাজারা দক্ষ প্রশাসক ছিলেন। তারা একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করেছিলেন এবং কর আদায়, ভূমি ব্যবস্থাপনা এবং সামরিক নিরাপত্তার কার্যক্রম দক্ষতার সাথে পরিচালনা করেছিলেন।
৮. শিক্ষার প্রসার: রাষ্টকূট রাজারা শিক্ষাকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন। তারা মঠ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন এবং পন্ডিতদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছিলেন।
৯. বাণিজ্য ও অর্থনীতি: রাষ্ট্রকূট রাজারা বাণিজ্যকে উৎসাহিত করেন। তাদের রাজ্যে মসলা, রত্ন ও কাপড়ের বাণিজ্য বৃদ্ধি পায়। এতে অর্থনীতিও সমৃদ্ধ হয়।
১০. ভারতীয় ইতিহাসে স্থান: রাষ্ট্রকূট রাজবংশ ভারতীয় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। তাদের শাসন ব্যবস্থা, শিল্পকলা ও ধর্মসহনশীলতা ভারতীয় সংস্কৃতিতে অনেক অবদান রেখেছে।
এই তথ্যগুলো আপনাকে রাষ্ট্রকূট রাজবংশ সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা দেবে। আরও জানতে চাইলে, এই বিষয়ে বিভিন্ন বই ও ওয়েবসাইটে তথ্য পাবেন।