১. মগধের উত্থান: খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দী থেকে ৪ষ্ঠ শতাব্দী পর্যন্ত মগধ রাজ্যে শিশুনাগ রাজবংশ শাসন করে। এই রাজবংশের উত্থানের ফলে মগধ ভারতের অন্যতম শক্তিশালী রাজ্যে পরিণত হয়।
২. বিম্বিসার: শিশুনাগ রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন বিম্বিসার।
তিনি মগধের রাজধানী রাজগৃহ থেকে শাসন করতেন এবং তার রাজত্বকালে মগধের সীমানা বৃদ্ধি পায়।
৩. অজাতশত্রু: বিম্বিসারের পুত্র অজাতশত্রু ছিলেন একজন দক্ষ রাজনীতিবিদ এবং যোদ্ধা। তিনি মগধের সামরিক শক্তি বাড়িয়েছিলেন এবং অন্যান্য রাজ্য জয় করে মগধের সীমানা আরও বিস্তৃত করেছিলেন।
৪. বুদ্ধের সমসাময়িক: শিশুনাগ রাজবংশের শাসনকালে বুদ্ধধর্মের উন্নতি ঘটে। বুদ্ধ নিজে অজাতশত্রুর সমসাময়িক ছিলেন এবং তিনি মগধে কিছুকাল ধর্মপ্রচার করেন।
৫. মহাপদান সুত্ত: শিশুনাগ রাজবংশের সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায় মহাপদান সুত্ত নামক পালি ধর্মগ্রন্থে।
এই গ্রন্থে রাজবংশের রাজাদের ইতিহাস এবং তাদের রাজত্বের বর্ণনা রয়েছে।
৬. জৈন ধর্মের পৃষ্ঠপোষকতা: শিশুনাগ রাজবংশ জৈন ধর্মেরও পৃষ্ঠপোষকতা করত। রাজা শ্রেণিক এবং তার পুত্র জীবক জৈন ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ পৃষ্ঠপোষক ছিলেন।
৭. শিল্প ও স্থাপত্য: শিশুনাগ রাজবংশের শাসনকালে মগধে শিল্প ও
স্থাপত্যের উন্নতি ঘটে। রাজগৃহে এই সময়কার নির্মিত জারাণ্ডা গুহাগুলি এখনও পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
৮. বাণিজ্যের বিকাশ: শিশুনাগ রাজারা বাণিজ্যের উন্নতির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। ফলে মগধ একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত হয়।
৯. সাহিত্যের পৃষ্ঠপোষকতা: শিশুনাগ রাজারা সাহিত্যেরও পৃষ্ঠপোষকতা করতেন। এই সময়কার পালি সাহিত্যে এই রাজবংশের রাজাদের উল্লেখ পাওয়া যায়।
১০. মৌর্য সাম্রাজ্যের পূর্বসূচী: শিশুনাগ রাজবংশ মৌর্য সাম্রাজ্যের পূর্বসূচী হিসেবে বিবেচিত হয়। শিশুনাগ রাজারা মগধের শাসন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছিলেন, যা
মৌর্য রাজাদের ভারত জুড়ে তাদের সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠাতে সহায়তা করে।
শিশুনাগ রাজবংশ ভারতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই রাজবংশের শাসনকালে মগধ রাজ্য একটি শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ রাজ্য হয়ে ওঠে। এই রাজবংশের শাসনামলে নগরায়ন, বাণিজ্য, ধর্ম এবং শিল্পের বিকাশ ঘটে।