১. সময়কাল: বৈদিক যুগ খ্রিস্টপূর্ব ১৫০০ অব্দ থেকে ৫০০ অব্দ পর্যন্ত স্থায়ী হয়। এটি ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ যুগ, যার প্রভাব দক্ষিণ এশিয়ার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে আজও দেখা যায়।
২. বেদসমূহ: এই যুগের প্রধান ধর্মগ্রন্থ হলো বেদসমূহ, যার মধ্যে রয়েছে ঋগ্বেদ, যজুর্বেদ, সামবেদ এবং অথর্ববেদ। এগুলোতে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান, দেবদেবী, দর্শন এবং পৌরাণিক কাহিনী লিখিত রয়েছে।
৩. যজ্ঞ সংস্কৃতি: বৈদিক যুগে যজ্ঞ অনুষ্ঠান গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান ছিল। বিভিন্ন দেবতার প্রসন্নতা লাভের জন্য এবং কামনা পূরণের জন্য যজ্ঞ করা হতো।
৪. বর্ণ ব্যবস্থা: সমাজে বর্ণ ব্যবস্থা প্রচলিত ছিল। ব্রাহ্মণ, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য এবং শূদ্র নামে চারটি বর্ণে সমাজ বিভক্ত ছিল। এই ব্যবস্থা বংশগত ছিল এবং সামাজিক অবস্থান ও পেশাকে প্রভাবিত করতো।
৫. নারী অবস্থান: নারীরা সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। তবে, তাদের অধিকার পুরুষদের মতো বেশি ছিল না। ক্রমশ নারীদের অবস্থানের অবনতি ঘটে।
৬. শিল্প ও সাহিত্য: বৈদিক যুগে প্রথম লাঙল বামুন গৃহ, মৃৎপাত্র এবং হস্তশিল্পের বিকাশ ঘটে। ঋগ্বেদ তৎকালীন সাহিত্যের অন্যতম উজ্জ্বল নিদর্শন।
৭. অর্থনীতি: কৃষি ছিল প্রধান জীবিকা নির্বাহের উপায়। পশুপালন, মৎস্য চাষ এবং বাণিজ্যও গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক কার্যক্রম ছিল।
৮. শিক্ষা: গুরুকুলে শিক্ষা গ্রহণ করা হতো। ব্রাহ্মণ শিশুরা বেদের অধ্যয়ন করতেন। ক্ষত্রিয় শিশুরা যুদ্ধবিদ্যা ও রাজনীতি শিখতেন।
৯. রাষ্ট্র ব্যবস্থা: রাজার নেতৃত্বে রাজতন্ত্র প্রচলিত ছিল। গ্রাম, জনপদ এবং রাজ্য নামে তিন স্তরে রাষ্ট্র পরিচালিত হতো।
১০. বৈদিক যুগের প্রভাব: বৈদিক যুগের ধর্মীয় বিশ্বাস, দর্শন, সাহিত্য এবং বর্ণ ব্যবস্থার প্রভাব পরবর্তী যুগের হিন্দুধর্ম, বৌদ্ধধর্ম, জৈনধর্ম এবং ভারতীয় সংস্কৃতির উপর গভীর প্রভাব ফেলেছে।
আশা করি, এই ১০টি তথ্য আপনাকে বৈদিক যুগ সম্পর্কে কিছু বুঝতে সাহায্য করবে।