তালেবানরা কবে পাকিস্তানে শরিয়া আইন আনবে?

নিঃসন্দেহে আপনি সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচুর পরিমাণে পাকিস্তানিদের দেখতে পাবেন যারা ইসলামী আইনের পাশাপাশি শরিয়া সম্পর্কে খুব সোচ্চার। কিন্তু আপনি যদি তাদের প্রাত্যহিক জীবনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখেন, তাহলে আপনি লক্ষ্য করবেন যে তারা বেশ মধ্যপন্থী এবং লিবারেল। ইসলামিক মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক অনেক প্রথা ও ঐতিহ্য আছে যেগুলো বিষয়ে বলার মতো জ্ঞান নেই। তাই সাধারণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক। তাদের মধ্যে অনেকেই হলিউড/বলিউড মুভি দেখার পাশাপাশি শিল্পের অনুরাগী। এমনকি পাকিস্তান নিজেই মুভি বানায়,তাদের মুভি,মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি রয়েছে । আপনি হয়তো জেনে অবাক হবেন না যে যে তাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে শিল্প, সংস্কৃতি এবং খেলাধুলার অনুরাগী। সুতরাং বিষয়টি সুবিধামত বোঝার জন্য একটি অনুমানমূলক পাকিস্তান কল্পনা করা যাক,যেখানে শরিয়া আইন লাগু হতে পারে।


তবে আমরা আমাদের নিজেদের থেকে কিছু একটা সিদ্ধান্তে আসার আগে, এটার বাস্তবতা যাচাই করা যাক যে পাকিস্তান একটি সমাজ হিসাবে তাদের নিজেদের ভূখণ্ডে তালেবানের শরিয়াকে গ্রহণ করতে প্রস্তুত কিনা?

  • পাকিস্তানি সকল পুরুষরা কি দাড়ি বাড়াতে এবং পাগড়ি দিয়ে মাথা ঢাকতে প্রস্তুত?
  • এখানে শরিয়া আইন কার্যকর হলে কি সকল পাকিস্তানি মহিলারা নিজেদের ইচ্ছায় নাকাব,বোরকা গ্রহণ করতে ইচ্ছুক?
  • পাকিস্তান কি সেই সমস্ত বিলবোর্ড এবং সাইনবোর্ড বাতিল করতে প্রস্তুত যেখানে কোনও পণ্যের প্রচারের জন্য মহিলা মডেলদের চিত্রিত করা হয়?
  • পাকিস্তান কি ইসলামে নিষিদ্ধ সুদভিত্তিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা বাতিল করতে প্রস্তুত হবে?
  • পাকস্তান কি ইসলামী মূল্যবোধের সাথে সাংঘর্ষিক তার নাটক, সঙ্গীত শিল্প এবং বিনোদন চ্যানেল বন্ধ করে দেবে?

সম্ভবত অনেক পাকিস্তান প্রেমী এর বিরোধে ঝাঁপিয়ে পড়বে এবং বলবে যে আপনি মনোযোগ আকর্ষণ করার জন্য নিজের থেকে এই জিনিসগুলি লিখছেন। তাই সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাদের একটি ওপেন চ্যালেঞ্জ আছে। অনুগ্রহ করে এই প্রশ্নগুলি যে কোনো পাকিস্তানি পেজ, চ্যানেল, স্পেসে রাখুন এবং এই বিষয়ে তাদের উত্তর পাওয়ার চেষ্টা করুন। আমরা শতভাগ নিশ্চিত যে আপনি খুব বিভ্রান্তিকর উত্তর পাবেন। এইখানেই এটা খুবই দুমুখো মনে হয় যেখানে "আমরা আনন্দ করছি, উল্লাস করছি এবং আফগানিস্তানের জন্য শরিয়া চাইছি, সেখানে আমাদের জীবনধারা এবং মূল্যবোধ সম্পূর্ণ বিপরীত!"



যেভাবে তালেবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে, তাতে সন্দেহ রয়েছে যে পাকিস্তানিরা তাদের দেশে এই ধরনের পরিবর্তন গ্রহণ করতে প্রস্তুত। প্রথমত, শরিয়া স্লোগানগুলি কেপিকে(খাইবার-পাখতুন-খওয়া) এবং বেলুচিস্তানের কিছু প্রত্যন্ত অঞ্চলে পুনরুজ্জীবিত হতে পারে, কিন্তু শহরাঞ্চলে এবং অভিজাত শ্রেণিতে সেগুলি ব্যাপক হারে কখনোই বিস্তার লাভ করবে না। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তান সেনাবাহিনী যা ওই দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শক্তি, তারা কখনই চাইবে না যে এই উপাদানগুলি তাদের ভূখণ্ডে বেড়ে উঠুক কারণ তারা জানে যে তাহলে তাদের দীর্ঘস্থায়ী সেনা সাম্রাজ্যের অবসান ঘটবে। পাকিস্তানে আত্মঘাতী বোমা হামলা শুরু হয়েছিল টিটিপি (তেহরীক ই তালেবান পাকিস্তান) এর উত্থানের সাথে সাথেই, এবং বর্তমানে তা ব্যাপক হারে বেড়ে গিয়েছে ।সেগুলো তারা প্রত্যক্ষ করেছে যাতে  নিরপরাধ মানুষ মারা গিয়েছিল। তাই পাকিস্তানিরা ভালো করেই জানে যে, তাদের দেশের পরিণতি কী হবে যদি তারা তালেবানের শরিয়াকে সমর্থন করে! এই কারণেই ইমরান খান সরকার থেকে সরে যাওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানিরা আবার মার্কিন মুলুকের শরণাপন্ন হয়েছে।



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনও বিষয়ে ডাউট থাকে বা কোনও বিষয় suggest করতে চান তাহলে মেল করুন!

নবীনতর পূর্বতন

banglafacts 4