Article 240 and Chandigarh Controversy Explained in Bengali

চণ্ডীগড় বিতর্ক এবং সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০ – সম্পূর্ণ বিশ্লেষণ | Article 240 Chandigarh Issue Explained in Bengali | Chandigarh Under Article 240

Article 240 Chandigarh controversy explained in Bengali

Quick Summary: Article 240 রাষ্ট্রপতিকে নির্দিষ্ট কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে সরাসরি বিধি জারির ক্ষমতা দেয়। 2025 সালে চণ্ডীগড়কে এই অনুচ্ছেদের আওতায় আনার প্রস্তাবে পাঞ্জাব–হরিয়ানা এবং কেন্দ্রের মধ্যে বড় রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যখন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০–র আওতায় চণ্ডীগড়কে আনার প্রস্তাব সামনে এনেছে, তখন রাজনীতি, প্রশাসন, ফেডারালিজম এবং পাঞ্জাব-হরিয়ানার দাবি নিয়ে দেশজুড়ে তীব্র আলোচনা শুরু হয়েছে। চণ্ডীগড় ভারতের অন্যতম রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল অঞ্চল, যা একইসাথে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার যৌথ রাজধানী। ফলে এর সাংবিধানিক অবস্থান পরিবর্তনের যে কোনও প্রস্তাবই ব্যাপক বিতর্ক তৈরি করে।

এই বিশদ ব্যাখ্যামূলক নিবন্ধে আমরা আলোচনা করবো—
অনুচ্ছেদ ২৪০ কী?
কেন চণ্ডীগড়কে অনুচ্ছেদ ২৪০-এর আওতায় আনার চেষ্টা?
এতে কী প্রশাসনিক পরিবর্তন আসতে পারে?
পাঞ্জাব-হরিয়ানার রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া কী?
ফেডারাল স্ট্রাকচারের ওপর এর প্রভাব
কেন্দ্রের সাম্প্রতিক ব্যাখ্যা ও রাজনৈতিক অবস্থার বিশ্লেষণ

পাঠকের সুবিধার জন্য বিষয়গুলো ধাপে ধাপে বিশ্লেষণ করা হলো।


অনুচ্ছেদ ২৪০ (Article 240) কী?

ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৪০ কেন্দ্রীয় সরকারকে বিশেষ ক্ষমতা দেয় নির্দিষ্ট কিছু কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের (Union Territory) জন্য আইন ও বিধি জারি করার। এই বিধিগুলো সরাসরি ভারতের রাষ্ট্রপতি জারি করেন এবং এগুলোর পার্লামেন্টে পাস হওয়া আইনের সমান আইনি ক্ষমতা থাকে

বর্তমানে যেসব কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে Article 240 প্রযোজ্য:

  • আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ
  • লক্ষ্যদ্বীপ
  • দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ
  • পুদুচেরি (কেবল যখন বিধানসভা ভেঙে যায় বা স্থগিত থাকে)

যেখানে Article 240 প্রযোজ্য নয়:

  • দিল্লি
  • জম্মু ও কাশ্মীর

কারণ এই দুই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের নিজস্ব বিধানসভা রয়েছে এবং আলাদা সাংবিধানিক ধারা অনুসারে পরিচালিত হয়।

SEO Keywords: Article 240 Explained, Chandigarh Article 240 Issue, Chandigarh UT Status, Indian Constitution Article 240 Bengali


চণ্ডীগড়কে অনুচ্ছেদ ২৪০-এর আওতায় আনার প্রস্তাব কেন?

২০২৫ সালের শীতকালীন অধিবেশনে কেন্দ্র সরকার সংবিধান (১৩১তম সংশোধনী) বিল, ২০২৫ সংসদে উত্থাপনের পরিকল্পনা করে। এই বিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল—
চণ্ডীগড়কে অন্যান্য কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মতো Article 240-এর আওতায় আনা।

কেন্দ্রের সরকারি যুক্তি

গৃহমন্ত্রকের দাবি—এটি একটি "টেকনিক্যাল" সংশোধনী, যার উদ্দেশ্য:

  • আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া সহজ করা
  • কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের প্রশাসন আরও কার্যকর করা
  • চণ্ডীগড়ে আইনি ও প্রশাসনিক কাজের স্বচ্ছতা আনা

কিন্তু বাস্তবে এর রাজনৈতিক ও ফেডারাল প্রভাব আরও গভীর।


Article 240 প্রয়োগ হলে চণ্ডীগড়ের প্রশাসনে কী পরিবর্তন আসবে?

চণ্ডীগড় বর্তমানে নিম্নরূপ পরিচালিত হয়:

বর্তমান ব্যবস্থা

  • প্রশাসক: পাঞ্জাবের রাজ্যপালই চণ্ডীগড়ের প্রশাসক হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন
  • আইন প্রণয়ন: চণ্ডীগড়ে আইন কেবলমাত্র ভারতের সংসদ করতে পারে
  • ক্যাডার সিস্টেম: পাঞ্জাব ও হরিয়ানার আমলা 60:40 অনুপাতে চণ্ডীগড়ে পদায়িত হন

প্রস্তাবিত ব্যবস্থায় পরিবর্তন

যদি Article 240 চণ্ডীগড়ে প্রযোজ্য হয়:

১. রাষ্ট্রপতির সরাসরি নিয়ন্ত্রণ

রাষ্ট্রপতি সরাসরি বিধি জারি করতে পারবেন, যা সংসদীয় আইন বাতিল বা সংশোধন করতে সক্ষম হবে।

২. পার্লামেন্টকে পাশ কাটানো সম্ভব হবে

সংসদীয় বিতর্ক বা ভোট ছাড়াই নির্দেশ জারি করা যাবে—যা ফেডারাল কাঠামোর জন্য উদ্বেগজনক।

৩. আলাদা লেফটেন্যান্ট গভর্নর (LG) নিয়োগের পথ তৈরি হবে

পাঞ্জাবের গভর্নরের অতিরিক্ত দায়িত্ব শেষ হয়ে যেতে পারে।

৪. প্রশাসনিক ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হবে

একজন জয়েন্ট সেক্রেটারির একটি নোটের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনে বড় পরিবর্তন আনা যাবে (যেমন—মেয়রের মেয়াদ, কর্পোরেশন বিধি ইত্যাদি)।

এসব কারণে অনেকেই বলছেন, এই পরিবর্তন কেবল প্রশাসনিক নয়—এটি রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।


পাঞ্জাব ও রাজনৈতিক দলগুলো কেন তীব্রভাবে বিরোধিতা করছে?

প্রস্তাবটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই পাঞ্জাবের সমস্ত রাজনৈতিক দল (AAP, কংগ্রেস, SAD) একযোগে বিরোধিতা করে। এমনকি পাঞ্জাব BJP-ও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়—যা রাজনীতিতে বিরল ঘটনা।


পাঞ্জাবের ঐতিহাসিক দাবি

চণ্ডীগড় মূলত পাঞ্জাবের জন্যই নির্মিত হয়েছিল—

  • ১৯৪৭ সালের পরে লাহোর পাকিস্তানে চলে গেলে পাঞ্জাবের নতুন রাজধানী তৈরির প্রয়োজন হয়
  • ১৯৬৬ সালের Punjab Reorganisation Act পাস হলে হরিয়ানা আলাদা রাজ্য হিসেবে গঠিত হয়
  • চণ্ডীগড়কে অস্থায়ীভাবে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা হয় এবং দুই রাজ্যের যৌথ রাজধানী করা হয়

কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:

এই আইনে কোথাও হরিয়ানাকে স্থায়ী অধিকার দেওয়া হয়নি—শুধু ব্যবহারভিত্তিক ব্যবস্থা করা হয়েছিল।


Rajiv–Longowal Accord (1985) এবং অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি

১৯৮৫ সালের ঐতিহাসিক রাজীব–লঙ্গোওয়াল চুক্তিতে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছিল:

  • ১৯৮৬ সালের ২৬ জানুয়ারি চণ্ডীগড় পাঞ্জাবকে হস্তান্তর করা হবে
  • হরিয়ানাকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে কিছু সীমান্তবর্তী গ্রাম দেওয়া হবে

কিন্তু চুক্তিটি কখনই বাস্তবায়িত হয়নি।
ফলে পাঞ্জাবের রাজনৈতিক দলগুলো মনে করে—
চণ্ডীগড়ের ওপর পাঞ্জাবের ঐতিহাসিক ও সাংবিধানিক অধিকার উপেক্ষা করা হচ্ছে।

Comparison: Proposed Amendment vs Rajiv–Longowal Accord (1985)

Key Aspect Proposed Constitutional Amendment (2025) Rajiv–Longowal Accord (1985)
Main Objective Bring Chandigarh under Article 240 to allow Presidential regulations for governance. Transfer Chandigarh to Punjab as its capital, fulfilling regional demands.
Impact on Chandigarh’s Status Strengthens UT status; increases central control. Would reduce UT role; Chandigarh becomes exclusive capital of Punjab.
Impact on Punjab Seen as weakening Punjab’s claim over Chandigarh. Strengthened Punjab’s political and administrative rights.
Impact on Haryana Haryana loses nothing directly; existing shared capital setup continues. Haryana receives alternative villages as territorial compensation.
Political Response Strong opposition from Punjab (AAP, Congress, SAD, BJP Punjab unit). Initially welcomed in Punjab, though implementation stalled amid tensions.
Implementation Status Proposal kept on hold; no bill introduced yet. Never implemented; remains an unfulfilled promise.
Federal Impact Raises concerns over centralisation and reduced state say. Supports federal structure by giving Punjab greater administrative autonomy.
Public Sentiment Viewed as a move against Punjab’s identity and historical rights. Seen as a resolution to long-standing territorial demands.

বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিক্রিয়া

AAP (শাসক দল, পাঞ্জাব)

  • অরবিন্দ কেজরিওয়াল: "পাঞ্জাবের পরিচয় আক্রমণের মুখে। এটি পাঞ্জাবের আত্মার ওপর আঘাত।"
  • মুখ্যমন্ত্রী ভাগবন্ত মান: "এটি পাঞ্জাবের রাজধানী ছিনিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র।"

কংগ্রেস

  • রাজা ওয়ারিং: "সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় এবং বিপজ্জনক পদক্ষেপ।"
  • রনদীপ সুরযেওয়ালা: "ভারতের ফেডারেল কাঠামোর ওপর সরাসরি আঘাত।"

Shiromani Akali Dal (SAD)

  • সুখবীর সিং বাদল: "পাঞ্জাবের অধিকার লুণ্ঠনের চেষ্টা। এটি একটি ঐতিহাসিক বিশ্বাসঘাতকতা।"

Punjab BJP (দুর্লভ বিরোধিতা)

  • সুনীল জাখড়:
    • "চণ্ডীগড় পাঞ্জাবের অবিচ্ছেদ্য অংশ।"
    • পাঞ্জাব BJP-এর পক্ষ থেকে কেন্দ্রের কাছে স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি

ফেডারালিজম সংক্রান্ত উদ্বেগ

বিরোধীরা যুক্তি দিচ্ছেন যে Article 240 চণ্ডীগড়ে প্রয়োগ হলে—

১. কেন্দ্র সরাসরি রাজ্য আইনের ওপর প্রভাব ফেলতে পারবে

অর্থাৎ রাজ্যগুলোর মতামত বা সংসদীয় আলোচনা ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে।

২. ১৯৬৬ সালের যৌথ রাজধানী ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে

৩. কেন্দ্রের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হবে

যা ভারতের সংবিধানিক ফেডারেল কাঠামোর বিপরীত


কেন্দ্রের সর্বশেষ ব্যাখ্যা—রাজনৈতিক চাপের পর ‘পিছিয়ে আসা’?

২২–২৩ নভেম্বর ২০২৫-এ তীব্র বিরোধিতার মুখে কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রক একটি ‘ড্যামেজ কন্ট্রোল’ বিবৃতি দেয়।

গৃহমন্ত্রকের মূল বক্তব্য

১. এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি

"প্রস্তাব বিবেচনাধীন আছে।"

২. শীতকালীন অধিবেশনে কোনও বিল আনা হবে না

"এই বিষয়ে কোনও বিল আনার পরিকল্পনা নেই।"

৩. চণ্ডীগড়ের বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো পরিবর্তনের উদ্দেশ্য নেই

"পাঞ্জাব–হরিয়ানার প্রচলিত ব্যবস্থা অপরিবর্তিত থাকবে।"

৪. স্টেকহোল্ডার আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত

"সব পক্ষের মতামত নেওয়ার পরে সিদ্ধান্ত হবে।"

এর মানে—
কেন্দ্র সম্পূর্ণভাবে পিছিয়ে যায়নি, তবে রাজনৈতিক চাপের কারণে আপাতত স্থগিত রেখেছে


চণ্ডীগড়ের প্রশাসনিক ইতিহাস: কেন এই বিতর্ক বারবার ওঠে?

চণ্ডীগড়ের প্রশাসনিক কাঠামো অতীতে বারবার পরিবর্তনের প্রস্তাব এসেছে।

গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ:

  • ১৯৮৪: পাঞ্জাবে সন্ত্রাসবাদী পরিস্থিতির কারণে পাঞ্জাবের রাজ্যপালকে চণ্ডীগড়ের প্রশাসক করার ব্যবস্থা
  • ২০১৬: কে. জে. আলফন্সকে আলাদা প্রশাসক করার প্রস্তাব—পাঞ্জাব সরকারের তীব্র প্রতিবাদের পর বাতিল

এই ইতিহাস প্রমাণ করে, চণ্ডীগড় শুধু একটি শহর নয়—
এটি রাজনৈতিক পরিচয়, ফেডারাল ভারসাম্য এবং উত্তর ভারতের ক্ষমতার প্রতীক


উপসংহার: Article 240 এবং Chandigarh বিতর্ক – এখন কোন পথে যাবে?

চণ্ডীগড়ের সাংবিধানিক অবস্থান কেবল প্রশাসনিক বিষয় নয়—
এটি পাঞ্জাবের আত্মপরিচয়, হরিয়ানার দাবি, কেন্দ্র–রাজ্য সম্পর্ক, এবং ভারতের ফেডারেল কাঠামোর ভবিষ্যৎ—সবকিছুর সঙ্গে গভীরভাবে যুক্ত।

বর্তমান পরিস্থিতি সংক্ষেপে:

  • সরকার বিল পিছিয়ে রেখেছে, কিন্তু প্রস্তাব প্রত্যাহার করেনি
  • পাঞ্জাবের রাজনৈতিক দলগুলো একজোট হয়ে প্রতিবাদ করছে
  • হরিয়ানাও এই পরিবর্তনের বিভিন্ন দিক নিয়ে সতর্ক
  • জাতীয়ভাবে বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ ফেডারেল বিতর্কে পরিণত হয়েছে

আগামী দিনে এই বিতর্ক আবার জোরালো হতে পারে।
স্টেকহোল্ডারদের আলোচনার ওপরই নির্ভর করবে চণ্ডীগড়ের ভবিষ্যত সাংবিধানিক কাঠামো।


People Also Ask

1. What is Article 240 of the Indian Constitution?
Article 240 empowers the President of India to make regulations for certain Union Territories that do not have their own legislatures, giving those regulations the same force as Parliamentary laws.

2. Why is Chandigarh being considered under Article 240?
The Central Government proposed bringing Chandigarh under Article 240 to simplify the law-making process for the Union Territory and align it with other UTs without legislatures.

3. How will Article 240 affect Chandigarh’s administration?
If applied, the President will gain power to issue regulations directly for Chandigarh, potentially bypassing Parliament and altering the existing administrative structure.

4. Why is Punjab opposing the Article 240 proposal?
Punjab argues that Chandigarh historically belongs to the state, and placing it under Article 240 weakens Punjab’s claim and violates past agreements like the 1985 Rajiv–Longowal Accord.

5. What is the Centre’s latest clarification on the issue?
The Ministry of Home Affairs stated that no final decision has been taken and no bill will be introduced in the Winter Session, assuring that traditional arrangements will not be changed without stakeholder consultations.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

যদি আপনার কোনও বিষয়ে ডাউট থাকে বা কোনও বিষয় suggest করতে চান তাহলে মেল করুন!

নবীনতর পূর্বতন

banglafacts 4