এটি ফেব্রুয়ারী 2013 এর ঘটনা, একজন সন্ত্রাসী কোয়েটায় নিজেকে উড়িয়ে দেয় এবং তার এই কর্মের ফলে, 110 হাজারা তাদের মূল্যবান জীবন হারিয়েছিল। কি অপরাধ ছিল তাদের,শিয়া হওয়া??
পাকিস্তানের হাজারা সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই কোয়েটায় বাস করে এবং তারা বেশিরভাগই শিয়া ইসলামকে অনুসরণ করে। তাদের মুখের চেহারা দেখে সহজেই চেনা যেতে পারে। তারা দেখতে অনেকটা তিব্বতিদের মতো।
এই মর্মান্তিক ঘটনার প্রতি পাকিস্তানীদের সামগ্রিক প্রতিক্রিয়া খুব শান্ত ছিল। কাশ্মীর ও ফিলিস্তিনের প্রতি যতটা সহানুভূতি দেখায় পাকিস্তানি মিডিয়া, তারাও ততটা উদ্বিগ্ন ছিল না। তালিকায় সিরিয়া ও রোহিঙ্গাদেরও যোগ করুন। সাধারণ জনসাধারণের মধ্যে কোনও ক্ষোভ ছিল না। শুধুমাত্র একটি জিনিসের কারণে এবং তা হল "বিশ্বাস",শিয়া পন্থার প্রতি তাদের বিশ্বাস।
একটু ভাবুন আপনি শূন্য এর কম তাপমাত্রায় বসে আছেন, বৃষ্টি আর ঠান্ডা হাওয়ায় আপনার ভালোবাসার মানুষের জন্য বিচার চাইছেন এবং সরকারের টনক অবধি নড়ছে না। ভেবে দেখুন হাজারা সম্প্রদায়ের মানুষের মনে সেদিন কি ক্ষোভ জমা হয়েছিল।
পাকিস্তানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতি "নিন্দা বিবৃতি" জারি করেছিলেন যা প্রকৃতপক্ষে ভুক্তভোগীদের জন্য ছিল কলঙ্কজনক। বিক্ষোভকারীরা সেনাবাহিনীকে তাদের শহর দখলের দাবি জানায়। তারা তাদের প্রিয়জনকে কবর দিতেও প্রস্তুত ছিল না। সরকারের ঠাণ্ডা প্রতিক্রিয়ায় তারা এতটাই হতাশ ছিল।
খোলা বাতাসে প্রিয়জনের মৃতদেহ নিয়ে তারা 4 দিন অতিবাহিত করেছিল। চার দিন পর কোয়েটায় পৌঁছান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শুধু এটা বোঝানোর জন্য যে তাদের উচিত তাদের ভালোবাসার মানুষদের কবর দেওয়া। তবুও তারা কবর দিতে রাজি ছিল না। পাকিস্তানে দেশব্যাপী বিক্ষোভ হয়েছিল কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাদের সকলের নেতৃত্বে ছিল শিয়ারা। সুন্নি সম্প্রদায়ের বেশিরভাগই নীরব ছিলেন বা খুব বেশি সোচ্চার ছিলেন না কারণ তারা বেশিরভাগ ব্যস্ত ছিলেন কাশ্মীর এবং ফিলিস্তিন সম্পর্কিত সমস্যা নিয়ে।
2014 সালে পেশোয়ার স্কুল হত্যাকাণ্ডের পরে এই ঘটনাটি এখনও পাকিস্তানের সবচেয়ে মারাত্মক ট্র্যাজেডি হিসাবে বিবেচিত হয়। 2016 সালেও কোয়েটা তে একটা বড়ো বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।




