1675 সালে জন্মগ্রহণকারী তারাবাই ছিলেন শিবাজী মহারাজের মারাঠা বাহিনীর বিখ্যাত জেনারেল হাম্বিরাও মোহিতের কন্যা। এক অল্পবয়সী মেয়ে হিসাবে সম্পূর্ণভাবে তিনি তরোয়াল যুদ্ধ, তীরন্দাজ, অশ্বারোহী, সামরিক কৌশল, কূটনীতি এবং রাজ্যের অন্যান্য সমস্ত বিষয়ে ভালভাবে প্রশিক্ষিত ছিলেন।
ইনি একজন মহিলা যিনি মারাঠাদের উত্থান ও পতন প্রত্যক্ষ করেছিলেন। এনার শিবাজী মহারাজের ছোট ছেলে রাজারামের সাথে বিয়ে হয়েছিল। এটা এমন একটা সময় ছিল যখন মুঘল এবং মারাঠারা দাক্ষিণাত্যের নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্রমাগত যুদ্ধে লিপ্ত ছিল।
স্বামীর আকস্মিক মৃত্যুর পর, তারাবাই রাণী হিসেবে মারাঠা সাম্রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করেন (ওনার 4 বছর বয়সী ছেলে শিবাজী দ্বিতীয়ের জন্য)। মারাঠাদের প্রতি মুঘল আক্রমণ বন্ধ করতে হলে (স্বয়ং আওরঙ্গজেবের নেতৃত্বে) একটি কৌশলগত এবং স্থিতিশীল নেতৃত্বের জরুরি প্রয়োজন উপলব্ধি করে। তাই এই 25 বছর বয়সী বিধবা মারাঠা সেনাবাহিনীর কমান্ড গ্রহণ করেন।
এই বুদ্ধিমতী মহিলা ওনার স্বামীর জীবদ্দশাতেই বেসামরিক, কূটনৈতিক এবং সামরিক বিষয়ে তার জ্ঞানের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য এই জ্ঞান ব্যবহার করেছিলেন - দুর্গের মধ্যে ভ্রমণ, গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারিত্ব তৈরি করা, সম্পদ এবং জনগণকে একত্রিত করা ইত্যাদি ইত্যাদি।
*মুঘল ঐতিহাসিক খাই খান এর মতে,শাসক হিসাবে সাত বছরের সময়কালে, তারাবাই ভারতের সেই সময়কার শক্তিশালী শাসক আওরঙ্গজেবের বিশাল সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মারাঠা প্রতিরোধ পরিচালনা করেছিলেন।
মারাঠা প্রতিরোধকে দমন করতে বারবার ব্যর্থতার মধ্যে 1707 সালের 2শে মার্চ বয়স্ক ঔরঙ্গজেব মারা যান।
তারাবাই 1761 সালে 86 বছর বয়সে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, আহমেদ শাহ আবদালি পানিপথের তৃতীয় যুদ্ধে মারাঠা বাহিনীকে পরাজিত করার কয়েক মাস পর। 1701 সালে এই অদম্য রানী দায়িত্ব না নিলে সম্ভবত মারাঠারা অনেক আগেই একই রকম পরাজয়ের শিকার হতো এবং ভারতের ইতিহাস আরও অনেকটাই ভিন্ন হতো।