আসুন জেনে নিই কিভাবে ভারতীয় রাজ্যগুলোর নামকরণ করা হয়েছে। ভারত বৈচিত্র্যের মধ্যে একতার নিখুঁত উদাহরণ। বিভিন্ন ধরনের মানুষ এবং ভাষা আছে, যা অনেক রাজ্যে বিভক্ত। আপনি কি কখনও ভেবে দেখেছেন কিভাবে এবং কেন ভারতীয় রাজ্যগুলি তাদের এই নাম পেয়েছে? আপনি যদি না জানেন এবং জানতে চান তাহলে সঠিক জায়গাতে এসেছেন।
অন্ধ্রপ্রদেশ - রাজ্যএর নাম অন্ধ্র জনগণের থেকে এসেছে, যারা প্রাচীনকাল থেকে এই অঞ্চলে বসবাস করে আসছে। তাদের নিজস্ব ভাষা হলো তেলেগু।মাদ্রাস থেকে একটি পৃথক রাজ্যের জন্য অন্ধ্রদের দাবির ফলে 1956 সালে অন্ধ্র প্রদেশ তার বর্তমান আকারে অস্তিত্ব লাভ করে।
অরুণাচল প্রদেশ - রাজ্যটির নামকরণ করা হয়েছে সংস্কৃত শব্দ "অরুণাচল" থেকে যার অর্থ "পাহাড়ের ছোট্ট সকাল" । এখানে প্রাকৃতিক সম্পদের(দৃশ্য) কোন অভাব নেই।
আসাম - আসামের একসময়ের শাসক "অহোমদের" নামে আসামের নামকরণ করা হয়েছে। অহোমদের মুঘলরা ১০ বারের চেষ্টাতেও পরাজিত করতে পারেনি।
বিহার - বিহার মানে আবাস, এর আসল নাম বিহার রাখা হয়েছিল কারণ এটি ছিল বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের আবাসস্থল।
ছত্তিশগড় - এই নাম দেওয়া হয়েছিল কারণ এই রাজ্যে মোট 36টি দুর্গ রয়েছে।
গোয়া - গোয়ার এই নামটি মূলত গরুর নামানুসারে রাখা হয়েছিল, এর উত্স সেখান থেকেই বলে মনে করা হয়।
গুজরাট - গুজরাটের নামকরণ করা হয়েছিল গুজরাদের নামে যারা 8 ম শতাব্দীতে সেখানে শাসন করেছিলেন।
হরিয়ানা - এই রাজ্যের নামের দুটি অর্থ রয়েছে, প্রথমত প্রভুর আবাস এবং দ্বিতীয়ত সবুজ বন। হরিয়ানার উর্বর জমিই হয়তো এই নামের কারণ।
হিমাচল প্রদেশ - এই রাজ্যটির নামকরণ করা হয়েছে এর প্রথম অক্ষর যা সংস্কৃত শব্দ "হিমাচল" থেকে এসেছে যার অর্থ "বরফে ঢেকে থাকা পাহাড়ের বাড়ি"।
জম্মু ও কাশ্মীর(UT)- এই UT র নামে জম্মুর নামকরণ করা হয় জম্মুর রাজা লোচনের নামে এবং কাশ্মীর মানে জলাশয়ে পরিপূর্ণ ভূমি।
ঝাড়খণ্ড - এই রাজ্যের নামের অর্থ "ঝাড়" মানে ঘন জঙ্গল এবং "খন্ড" অর্থ জমির টুকরো।
কর্ণাটক - এই রাজ্যের নামকরণ করা হয়েছে কর্নার্ড শব্দের নামানুসারে যার অর্থ উচ্চতা। এটি মূলত দাক্ষিণাত্য মালভূমির নামে নামকরণ করা হয়েছে।
কেরালা - এটা মনে করা হয় যে এই রাজ্যটি সমুদ্র থেকে ভগবান পরশুরাম বের করেছিলেন, যা পরে কেরালা নামে পরিচিত হয়েছিল।
মধ্যপ্রদেশ – ভারতের মধ্যভাগে থাকার কারণে এই রাজ্যের নাম হয় মধ্যপ্রদেশ।
মহারাষ্ট্র - মহারাষ্ট্র রাজ্যের নামের অর্থ "মহা" যার অর্থ মহান এবং "রাষ্ট্র" শব্দটি এখানে শাসক রাষ্ট্রীকা(রাষ্ট্রকুট) উপজাতি থেকে উদ্ভূত হয়েছে।
মণিপুর - একটি সংস্কৃত শব্দের উপর ভিত্তি করে এই রাজ্যের নাম, যার অর্থ অলঙ্কারে ভূষিত রাজ্য।
মেঘালয় - সংস্কৃত শব্দ থেকে উদ্ভূত এই রাজ্যের নাম, যার অর্থ মেঘের রাজ্য।
মিজোরাম - মিজোরাম রাজ্যটির নাম স্থানীয় ভাষার শব্দে অভিযোজিত করে রাখা হয়েছে। "মী" এর অর্থ মানুষ এবং "জো" এর অর্থ উচ্চ স্থান।
নাগাল্যান্ড - "নাগা" যা নাকা শব্দ থেকে উদ্ভূত যার অর্থ হল একজন ব্যক্তি যিনি নাক এবং কান ছিদ্র করেছেন। স্থানীয় উপজাতিদের জীবনযাপন থেকেই ওই রাজ্যের নাম রাখা হয়।
ওড়িশা - এখানে বসবাসকারী ওডরা জনগণের নামে এই রাজ্যের নামকরণ করা হয়েছিল।
পাঞ্জাব - পাঞ্জাবের হিন্দি আভিধানিক অর্থ হল পাঁচটি নদীর রাজ্য।
রাজস্থান - এই রাজ্যের নামের আক্ষরিক অর্থ হল সেই জায়গা যেখানে রাজা থাকেন।
সিকিম - সিকিমের নামটি সেখানকার আঞ্চলিক ভাষায় রাখা হয়েছে। "সি" এর অর্থ নতুন এবং "খিম" শব্দের অর্থ স্থান।
তেলেঙ্গানা - এই রাজ্যের নামের আক্ষরিক অর্থ হল তিনটি শিবলিঙ্গের স্থান।
তামিলনাড়ু - তামিল জনগণের সংখ্যাগরিষ্ঠতার কারণে এই রাজ্যের নামকরণ করা হয়েছিল তামিলনাড়ু।
ত্রিপুরা - এই রাজ্যের আভিধানিক অর্থ হল "ত্রি" অর্থ জল এবং প্রা মানে কাছাকাছি। অর্থাৎ জলের কাছাকাছি যে ভূখণ্ড।
উত্তরপ্রদেশ – উত্তরে থাকার কারণে এই রাজ্যের নাম উত্তর প্রদেশ।
পশ্চিমবঙ্গ- এখানকার সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি জাতির কারণে এই রাজ্যের নাম পশ্চিমবঙ্গ রাখা হয়।এই অঞ্চল একসময় বৃহৎ বঙ্গ রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ছিল।
আশা করি ভারতীয় রাজ্যগুলির নাম কীভাবে রাখা হয়েছিল, এই তথ্যটি আপনি পছন্দ করবেন এবং পছন্দ হলে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন।